বাঁশখালীর সাংসদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সরকারদলীয় সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন, উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাবুল আজাদ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে ঘটনার বিষয়ে কথা বলেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল (শনিবার) তিনি বাঁশখালীতে তাঁর কার্যালয়ে যান। দুপুরে তাঁর সাক্ষ্য নেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও থানার ওসি। দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রায় ৪০ মিনিট ধরে তাঁর সাক্ষ্য নেন।
মামলার তদন্ত বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এ কে এম হাফিজ আক্তার গতকাল রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় আমরা সাক্ষী খুঁজিছ। অভিযোগের যথাযথ সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে আজ রোববার সাংসদ উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করতে পারেন বলে জানান চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম-বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম। তিনি সাংসদ মোস্তাফিজের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
পছন্দমতো নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়ায় গত বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামকে স্থানীয় সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে ডেকে নেন। তখন ইউএনও তাঁর কার্যালয়ে ছিলেন না। পরে ওই কার্যালয়ের দরজা বন্ধ করে সাংসদ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধর করেন। ওই দিন বিকেলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈঠকে সাংসদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে বাঁশখালীর গতকাল শনিবারের সব কটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন স্থগিত করে ইসি। বৃহস্পতিবার রাতে সাংসদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
এদিকে সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের চাঁদপুর বাজারে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম আক্তারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম-বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম ও বাঁশখালী পৌর মেয়র সেলিমুল হক চৌধুরী।
প্রতিবাদ সমাবেশে খোরশেদ আলম বুধবারের ঘটনাকে সাজানো এবং সাংসদ ও আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপপ্রয়াস বলে মন্তব্য করেন।
মুঠোফোনে জানতে চাইলে খোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম আমাদের এমপি সাহেবের বিরুদ্ধে আজগুবি অভিযোগ তুলেছেন। নির্বাচন কর্মকর্তাকে নাকি এমপি সাহেব মারধর করেছেন। যদি মারধরই করা হয় তাহলে তাঁর শার্টের বোতাম ছেঁড়েনি কেন? তিনি স্বাভাবিক ভঙ্গিতে কী করে টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিলেন? এই প্রশ্নগুলোর জবাব তাঁকে দিতে হবে।’