রিভিউ আবেদন মীর কাসেমের

মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলী।

আজ রোববার দুপুরের দিকে মীর কাসেমের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পুনর্বিবেচনার আবেদনটি জমা দেন। এতে ১৪টি যুক্তি দেখানো হয়েছে।

মীর কাসেমের ফাঁসি বহাল রেখে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় ৬ জুন প্রকাশিত হয়। এরপর তাঁর মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। কারাগারে মীর কাসেমকে পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়। আজ আপিল বিভাগে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করলেন তিনি। এতেও তাঁর মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলে শেষ সুযোগ হিসেবে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। তা না করলে বা ওই আবেদন নাকচ হলে ফাঁসি কার্যকর করতে পারবে সরকার।

২০১২ সালের ১৭ জুন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মীর কাসেমকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ গঠন করে বিচারকাজ শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা হয়, মীর কাসেমের বিরুদ্ধে ১০টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে দুটি অভিযোগে তাঁকে ফাঁসির আদেশ ও আটটি অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর আপিল করেন মীর কাসেম। গত ৯ ফেব্রুয়ারি ওই আপিলের শুনানি শুরু হয়, শেষ হয় ২৪ ফেব্রুয়ারি।

১৯৭১ সালে চট্টগ্রামের কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে হত্যার দায়ে মীর কাসেমের ফাঁসি বহাল রেখে ৮ মার্চ রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ। রায়ে আরও ছয়টি অভিযোগে (২, ৩, ৭, ৯, ১০ ও ১৪) তাঁর বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড বহাল রাখেন আদালত। তিনটি অভিযোগ (৪, ৬, ১২) থেকে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়। এর মধ্যে একাত্তরে রঞ্জিত সেন ও টুন্টু দাসকে হত্যার (১২ নম্বর অভিযোগ) দায়ে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লা এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।