নিয়োগ পাওয়া চার শিক্ষকের কেউই আবেদনের যোগ্য নন!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন খোলা মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধ্যয়ন বিভাগে যে চারজনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের একজনও বিজ্ঞাপনে উল্লিখিত যোগ্যতার শর্ত পূরণ করেননি। অথচ আবেদনকারীদের মধ্যেই শর্ত পূরণকারী প্রার্থীরা ছিলেন।
গত মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এই চারজনকে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়। এর আগে ২১ জুন শিক্ষক নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনী কমিটির সদস্যরা ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আখতার সুলতানা, মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সুধাংশু শেখর রায় এবং একুশে টেলিভিশনের সিইও মনজুরুল আহসান বুলবুল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সিলেকশন কমিটি এসব দেখে থাকে। সব কিছু মিলিয়েই নিয়োগের বিচার-বিবেচনা করা হয়।
শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপনে আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা হিসেবে প্রার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫-এর মধ্যে ন্যূনতম ৪.২৫ এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে উভয় পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি অথবা সিজিপিএ-৪-এর মধ্যে ন্যূনতম ৩.৫০ পেতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, মুদ্রণ ও প্রকাশনা বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার ও অন্যান্য যোগ্যতা সমান থাকলে উচ্চতর ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
নিয়োগপ্রাপ্ত প্রভাষকদের মধ্যে দুজন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ-৩.৭০ পেয়েছেন। অপর দুজন স্নাতক সম্মানে সিজিপিএ-৩.৪৫ ও ৩.৪৭ পেয়েছেন। অর্থাৎ এঁদের কেউই বিজ্ঞাপনে উল্লিখিত আবেদনের শর্ত পূরণ করেননি। শর্ত না পূরণ করার ব্যাপারে তাঁরা নানা যুক্তি দেখালেও তাঁদের কেউই এ অভিযোগ অস্বীকার করতে পারেননি।
দুটি শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে আবেদন করেছিলেন মোট ২৫ জন। এর মধ্যে গত ১৬ মে প্রার্থী নির্বাচনী সভায় সাক্ষাৎকারের জন্য উপস্থিত ছিলেন আটজন। নির্বাচনী সভার জন্য প্রস্তুতকৃত প্রার্থী তালিকা থেকে দেখা যায়, উপস্থিত আটজন প্রার্থীর মধ্যে যে চারজনকে বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁরা প্রত্যেকেই আবেদনের শর্ত পূরণ করেন। কিন্তু তাঁদের কেউই নিয়োগ পাননি।
মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সুধাংশু শেখর রায় প্রথম আলোকে বলেন, বিজ্ঞাপনে প্রকাশনা ও প্রিন্টিংয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের অগ্রাধিকারের বিষয়টি ছিল। এটি নিয়োগ বোর্ডের দায়িত্ব। বোর্ড সব কিছু বিচার-বিবেচনা করেই নিয়োগ দিয়েছে।