আলোচনার মাধ্যমে এখনো সমাধান সম্ভব

বাংলাদেশের জনগণের কাছে কাঙ্ক্ষিত একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে দুই দলের পক্ষে আলোচনার মাধ্যমে এখনো সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা।
ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত হিদার ক্রুডেন ও মার্কিন দূতাবাস গতকাল মঙ্গলবার পৃথক বিবৃতিতে এ অভিমত তুলে ধরে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক সংকটের সমাধানের উপায় খুঁজে বের করতে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব দেওয়া উচিত।
আর কানাডা মনে করে, রাজনীতিবিদদের গ্রেপ্তার কিংবা হরতাল ইতিবাচক রাজনৈতিক সংলাপের জন্য সহায়ক নয়।

মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতি: বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকারের মেয়াদ যখন দ্রুত শেষ হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বাংলাদেশের জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের পথ খুঁজে বের করতে ইতিবাচক সংলাপে বসতে দুই দলের সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব দেওয়াটা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে জরুরি হয়ে পড়ছে বলেই আমাদের বিশ্বাস।

আমরা বিশ্বাস করি, সদিচ্ছা থাকলে বাংলাদেশের জনগণের কাঙ্ক্ষিত একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের আয়োজনের লক্ষ্যে দুই দলের পক্ষে এখনো সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব। এটাই বাংলাদেশের মানুষের চাওয়া ও তাদের প্রাপ্য।

মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়ালের ঢাকা সফরের কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিনি খুব স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন সহিংসতা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ নয়, এটা গ্রহণযোগ্যও নয় এবং অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। গত কয়েক দিনের কাণ্ডজ্ঞানহীন সহিংসতা অত্যন্ত নিন্দনীয়। কেননা, বোমা ছুড়ে এবং যানবাহনে তাদের জীবন্ত পুড়িয়ে মেরে অসহায় লোকজনকে ইচ্ছাকৃতভাবে সহিংসতার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা বিশ্বাস করি, সব দলেরই অবাধে ও শান্তিপূর্ণভাবে মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। এই সুযোগ করে দেওয়াটা সরকার দায়িত্ব আর বিরোধী দলেরও উচিত শান্তিপূর্ণভাবে এ সুযোগের ব্যবহার করা।

কানাডার হাইকমিশনারের বিবৃতি: হিদার ক্রুডেন বলেন, আগামী নির্বাচনকে স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক, বিশ্বাসযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ করার ব্যাপারে রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে, সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানোর সুযোগ এখনো রয়েছে বলে মনে করে কানাডা।

হিদার ক্রুডেন বলেন, বাংলাদেশে অব্যাহতভাবে সহিংসতা বাড়তে থাকায় নিরপরাধ লোকজন হতাহতের ঘটনায় কানাডা অসন্তুষ্ট। কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা গোষ্ঠীর সহিংসতা হচ্ছে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও বহু মতের আদর্শের প্রতি কানাডা ও বাংলাদেশের অভিন্ন শ্রদ্ধাবোধের পরিপন্থী। রাজনীতিবিদদের গ্রেপ্তার কিংবা হরতাল ইতিবাচক রাজনৈতিক সংলাপের জন্য সহায়ক নয়।

কানাডার হাইকমিশনার বলেন, ‘সহিংসতা বাংলাদেশের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য ভারসাম্যহীন সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর হামলা আমরা অসন্তোষের সঙ্গে লক্ষ করেছি। চলমান অস্থিতিশীলতা বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের পরিবেশ বিশেষ করে ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং দীর্ঘ মেয়াদে জাতীয় অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে, যা খুব সহজে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না। তাই সহিংসতা বন্ধ করা ও চলমান পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করতে আমরা অব্যাহতভাবে সব দলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’