ভারতে বন্দীদের ফেরাতে বাংলাদেশের বিশেষ উদ্যোগ

ভারতের বিভিন্ন জেলে বন্দী বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। গত বছর ১৫৯ জনকে সাজা শেষে ফেরত পাঠানো হয়েছে, চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত ফেরত পাঠানো হয়েছে আরও ৫১ জনকে। আরও ২২৪ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে শুধু মহারাষ্ট্রে।

পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, কেরালা, দিল্লি ও পাঞ্জাবে বাংলাদেশি নাগরিকেরা বেশি রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রের খবর। এই রাজ্যগুলোর জেলেও অনেকে বন্দী। সম্প্রতি বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে একটি চিঠি লেখা হয়। জানতে চাওয়া হয়, সে রাজ্যের জেলখানা গুলিতে বাংলাদেশি বন্দীদের অবস্থা কী রকম। রাজ্যে বাংলাদেশিদের অবস্থান সম্পর্কেও তাদের কাছে খবরাখবর জানতে চাওয়া হয়।

এই চিঠির সূত্রেই দিল্লির হাইকমিশনের মিনিস্টার (কনস্যুলার) মোশারফ হোসেন সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের আটটি কারাগার পরিদর্শন করেন। এই কারাগারগুলিতে মোট ২২৪ জন বাংলাদেশি নাগরিক বন্দী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৭২ জন নারী। সাজার মেয়াদ শেষ হলে এঁদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

মোশারফ হোসেন আজ বুধবার এই প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মহারাষ্ট্রের মাত্র আটটি জেলে আমরা যেতে পেরেছি। ফলে গোটা রাজ্যে অথবা সারা ভারতে মোট কত বাংলাদেশি জেলবন্দী রয়েছেন তা বলা সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, ‘মহারাষ্ট্রের এই বাংলাদেশিদের অধিকাংশই নির্মাণ শিল্পের শ্রমিক। দৈনিক প্রায় ৮০০ টাকা মজুরিতে তারা বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করেন। নারীদের কেউ কেউ অসামাজিক কাজকর্মের সঙ্গেও যুক্ত। কেউ কেউ স্বেচ্ছায়, কেউ কেউ ভাগ্যের ফেরে। ওঁরা বলেছেন, নিছক অর্থনৈতিক কারণেই তাঁদের সীমান্ত টপকে চলে আসা। সাজা শেষ হলে এঁদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমাদের উদ্দেশ্য।’ তিনি এ কথাও বলেন, বন্দীদের কেউ কেউ জাল টাকা পাচারের অভিযোগে ধৃত, কারও বিরুদ্ধে রয়েছে কিডন্যাপিংয়ের অভিযোগ। তবে অধিকাংশই বিনা পাসপোর্টে ভারতে ঢোকার অভিযোগে ধরা পড়েছেন।

জেলবন্দী বাংলাদেশিদের দেশে ফেরানো যথেষ্ট ঝক্কির ব্যাপার। একেক জনের একেক রকমের সাজা। সাজার মেয়াদও এক এক ধরনের। এই কারণে বন্দীদের এক একটা দলে ভাগ করে সাজা শেষে ফেরত আনতে হয়। আইন অনুযায়ী জনপ্রতি দুজন করে পুলিশ দিতে হয়। এই কারণে ট্রেনের কামরা ভাড়া করতে হয়। বেনাপোলে তাদের তুলে দেওয়া হয় ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষীদের হাতে। তারা হস্তান্তর করে বিজিবিকে।