নলছিটিতে গুলি করে কলেজের ছাত্রকে হত্যা

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় গতকাল রোববার সজল হাওলাদার (১৯) নামের এক কলেজছাত্রকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
সজল উপজেলার পশ্চিম কামদেবপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে। তিনি নলছিটি ডিগ্রি কলেজ থেকে গত বছর উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পাস করেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সজল হাওলাদার গতকাল সকালে বাড়ি থেকে বের হন। বেলা পৌনে ১১টার দিকে বাড়ি থেকে চার কিলোমিটার দূরে মালুহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত ভবনের ভেতরে পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন এক ব্যক্তি। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
হাসপাতালের সার্জারি ইউনিটের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, খুব কাছ থেকে সজলের পায়ে গুলি করা হয়। গুলিতে তাঁর বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচের ধমনি ছিঁড়ে যায়। অতিরিক্ত ক্ষরণের কারণে সজলের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত সজলের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, মো. সাঈদ নামের ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের এক চালক তাঁকে খবর দেন, সজল গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই বিদ্যালয়ের ভেতরে পড়ে আছেন। পূর্বশত্রুতার জের ধরে সজল খুন হয়েছেন।
তবে হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত থাকতে পারে সে ব্যাপারে কিছুই বলতে রাজি হননি রফিকুল।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, স্থানীয় মোল্লারহাট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিহত সজলের এক আত্মীয় প্রথম আলোকে বলেন, মোল্লারহাট ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নির্বাচন নিয়ে দুই প্রার্থী মিজান আকন্দ ও জহিরুল ইসলামের পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। পরে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন মিজান আকন্দ। তাঁর পক্ষে কাজ করেছিলেন সজল হাওলাদার। ওই বিরোধের জের ধরেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁদের সন্দেহ।
মো. সাঈদ জানান, বেলা পৌনে ১১টার দিকে বৃষ্টির কারণে তিনি ওই বিদ্যালয়ের ভেতরে আশ্রয় নেন। এ সময় বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত কক্ষের মধ্য থেকে সজল তাঁকে ডাক দিয়ে বলেন, তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এরপর তিনি দ্রুত সজলের বাড়িতে খবর দেন।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সুলতান মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ঝালকাঠি সদর সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার এম এম মাহামুদ গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।