রেস্তোরাঁকর্মী সাইফুলও আসামি, ৮টি অস্ত্র ছিল ঘটনাস্থলে

আইএসের বার্তা সংস্থা আমাক থেকে নেওয়া গুলশানের পাঁচ হামলাকারীর ছবি প্রকাশ করে সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ। পরে ফেসবুকে বিভিন্নজন তাঁদের পরিচয় তুলে ধরে। বাংলাদেশ পুলিশও এসব ছবির পরিচয় নিশ্চিত করে। ছবিতে (ওপরে বাঁ থেকে) নিবরাস ইসলাম, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ এবং (নিচে বাঁ থেকে) খায়রুল ও শফিকুল
আইএসের বার্তা সংস্থা আমাক থেকে নেওয়া গুলশানের পাঁচ হামলাকারীর ছবি প্রকাশ করে সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ। পরে ফেসবুকে বিভিন্নজন তাঁদের পরিচয় তুলে ধরে। বাংলাদেশ পুলিশও এসব ছবির পরিচয় নিশ্চিত করে। ছবিতে (ওপরে বাঁ থেকে) নিবরাস ইসলাম, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ এবং (নিচে বাঁ থেকে) খায়রুল ও শফিকুল

গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা ও হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় রেস্তোরাঁকর্মী সাইফুল ইসলাম চৌকিদারকেও আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ মামলায় লিখেছে, নিহত অন্য পাঁচ সন্দেহভাজন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য। আর সাইফুল রেস্তোরাঁটির কর্মী হলেও তিনি জঙ্গিদের সহায়তা করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে জঙ্গিদের ব্যবহার করা তিনটি মেশিনগানসহ আটটি আগ্নেয়াস্ত্র, প্রচুর গুলি, ব্যবহৃত গুলির খোসা, নয়টি গ্রেনেডের পিনসহ ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনার তিন দিনের মাথায় গত সোমবার রাতে গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ওই মামলা দায়ের করেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। মামলার অন্য পাঁচ আসামি হলেন মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিরবাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল, শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল। তাঁরা সবাই সমন্বিত অভিযানে নিহত হয়েছেন।

এদিকে আজ বুধবার নিজের কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, নিহত সন্দেহভাজন জঙ্গিদের মধ্যে নিবরাস, খায়রুল ও শফিকুলকে আগে থেকেই খোঁজা হচ্ছিল। নিবরাসের বিরুদ্ধে গত ফেব্রুয়ারি মাসে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়।

পাঁচটি পিস্তল, তিনটি একে ২২ মেশিনগান উদ্ধার
সোমবার দায়ের করা মামলার জব্দ তালিকায়, ১২টি গাড়ি, দুটি মোটরসাইকেলসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি রয়েছে। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে পাঁচটি নাইন এমএম পিস্তল, তিনটি একে ২২ মেশিনগান, ১৩টি ম্যাগজিন ও ১২৭টি তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০০টি ব্যবহৃত গুলির খোসা, নয়টি ব্যবহৃত গ্রেনেডের সেফটি পিন, দুটি ছুরি এবং একটি করে চাপাতি ও চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।

মামলায় বলা হয়েছে, অভিযানে জিম্মি দশা থেকে ৩২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে জিম্মি উদ্ধার অভিযানের আগে ১৯ জন এবং পরে ১৩ জন উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া লোকজনের মধ্যে দুজন করে ইতালি ও শ্রীলঙ্কার, একজন জাপানি এবং বাকিরা রেস্তোরাঁর এদেশীয় কর্মী ও খদ্দের। জঙ্গিদের হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩২ জন। তাঁদের মধ্যে একজন গাড়িচালক ও একজন আনসার সদস্য ছাড়া বাকি সবাই পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা ও সদস্য।

আহত ব্যক্তিদের তালিকা
শেখ মো. মারুফ হাসান (অতিরিক্ত কমিশনার), আবদুল আহাদ, এডিসি গুলশান, সিরাজুল ইসলাম, ওসি গুলশান, এসআই ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস, নায়েক আক্তারুজ্জামান, কনস্টেবল মাসুদ রানা, এএসআই নুরজ্জামান, কনস্টেবল মানিক মিয়া, এসআই রাকিবুল ইসলাম খান, এএসআই বিল্লাল ভূঁইয়া, এসআই সুজন কুমার কুণ্ডু, কনস্টেবল সোহাগ খান, কনস্টেবল জাকির হোসেন, এএসআই মতিউর রহমান, এসআই মাহাবুব আলম, এসআই ইয়াসিন গাজী, কনস্টেবল কামরুজ্জামান, পিআই রফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল সজীব মিয়া, এসআই শেখ খালিদুর রহমান, কনস্টেবল আনারুল ইসলাম, এসআই ফারুক হোসেন, কনস্টেবল আলমগীর হোসেন, কনস্টেবল প্রদীপ চন্দ্র দাস, এসআই কবির হোসেন, কনস্টেবল মাহফুজুর রহমান, এএসআই নূর ইসলাম, ইন্সপেক্টর ওয়াহিদুজ্জামান (বনানী থানা), এডিসি ওবায়দুল হক, মেজবাউল শেখ (ব্যাটালিয়ন আনসার), গাড়িচালক রাজ্জাক ও জিয়াউর রহমান।