গাছে বেঁধে গৃহবধূ নির্যাতন, স্বামীসহ গ্রেপ্তার ২

গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়নের মধ্য ফলিয়া গ্রামে গত শনিবার আতিয়া বেগম (৩২) নামের এক গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। ওই গৃহবধূ বর্তমানে সদর হাসপাতালে ভর্তি। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী ফারুক হোসেনসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশ ও গৃহবধূর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নয় বছর আগে মধ্য ফলিয়া গ্রামের দিনমজুর মৃত আতিকুল্লাহ সরকারের মেয়ে আতিয়া বেগমের সঙ্গে একই গ্রামের মৃত মোজাহার মিস্ত্রির ছেলে ফারুক হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে এক লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময় আতিয়ার বাবা ফারুককে ৮০ হাজার টাকা দেন। বাকি ২০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য প্রায়ই স্ত্রীকে গালিগালাজ ও মারধর করতেন ফারুক হোসেন।
২০১৩ সালে ফারুক স্ত্রী ও দুই সন্তানকে রেখে সিলেটে যান। যৌতুকের ২০ হাজার টাকা না দিলে তিনি আর বাড়ি ফিরবেন না বলেও স্ত্রীকে জানিয়ে দেন। বাধ্য হয়ে ২০১৫ সালের শেষের দিকে আতিয়া বাবার বাড়ি চলে যান।
এদিকে ঈদের ছুটিতে ফারুক বাড়িতে আসলে আতিয়া দুই সন্তান নিয়ে গত শনিবার সকালে শ্বশুরবাড়ি যান। তাঁকে দেখেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের টাকা দাবি করেন। অপারগতার কথা জানালে আতিয়াকে তারা গালিগালাজ ও পরে একপর্যায়ে রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর শুরু করেন। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়া গিয়ে আতিয়াকে উদ্ধার করেন। তবে ভয়ে গৃহবধূর পরিবার পুলিশকে ঘটনা জানায়নি।
গত রোববার দুপুরে স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে পুলিশ ঘটনাটি জানতে পেরে গৃহবধূকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আতিয়া বেগম বর্তমানে সদর হাসপাতালের ৩৯ নম্বর শয্যায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমার কোনো অপরাধ ছিল না। যৌতুকের টাকার জন্য সেদিন আমাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে পেটানো হয়।’এ ঘটনায় আতিয়া বেগম বাদী হয়ে গত রোববার রাতে ফারুক হোসেনসহ ছয়জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। পুলিশ ফারুক হোসেন ও তাঁর বড় ভাই জাহিদুল ইসলামকে ওই রাতেই গ্রেপ্তার করে।
অভিযুক্ত ফারুক হোসেন গ্রেপ্তারের পর এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি যৌতুক চাই নাই। ব্যবসা করার জন্য ২০ হাজার টাকা চাইছি। আতিয়া ঘটনার দিন তালা ভেঙে আমার ঘরে ঢোকে। আমি ওকে বের হয়ে যেতে বলি। কিন্তু বের না হওয়ায় মারধর করেছি।’