খাদ্যাভাবে বানর

বন ও খাবারের উৎস কমে যাওয়ায় বানরের দল হানা দিচ্ছে ফসলি জমি ও মানুষের বাড়িঘরে। পথচারীদের হাত থেকেও খাবার ছিনিয়ে নিচ্ছে প্রাণীগুলো। তবু এদের প্রতি ভালোবাসা ও আগ্রহের কমতি নেই গ্রামবাসীর। এমন দৃশ্য দেখা যায় নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার রামপুর গ্রামে।
গত শুক্রবার রামপুর গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম রামপুর। গ্রামটির বেশির ভাগ অংশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। এখানে দীর্ঘদিন অবস্থান করছে বানর। বর্তমানে বানরের সংখ্যা প্রায় চার হাজার। তবে দিন দিন বনজঙ্গল কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে বানরগুলো। প্রতিনিয়ত খাবারের সন্ধানে ফসলি জমি ও মানুষের বাড়িঘরে হানা দিচ্ছে তারা।
গ্রামের কৃষক সুবোধ সাহা বলেন, ‘গাছের ফল থেকে শুরু করে বাড়িঘরের ভেতরে কোথাও কোনো খাবার রাখা যায় না। সুযোগ পেলেই বানরগুলা আইসা নিয়া যায়।’
রামপুর বাজারের ব্যবসায়ী হারুনুর রশীদ বলেন, ‘এই গ্রামের জঙ্গলে দল হইয়া থাকে বানরেরা। প্রত্যেকটা দলে দেড়-দুই শ বানর আছে। আর এ রকম প্রায় ১৫-২০টি দল আছে। আগের মতন জঙ্গলও নাই, তাই বানরের খাওনও কইমা গেছে। তাই সারা দিনই বানরের যন্ত্রণার মধ্যে থাকতে হয় আমাদের।’
গৃহবধূ রেখা রানী দাস বলেন, প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে বানর দেখতে মানুষ আসে। তারা মুড়ি, পাউরুটি, কলাসহ নানান খাবার নিয়ে এলেও এতগুলো বানরের জন্য তা খুবই কম।
স্থানীয় খিদিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, ‘বানরগুলো দেখে এ পর্যন্ত সবাই শুধু আশ্বাস দিয়ে গেলেন, বাস্তবায়নের কোনো হদিস নেই। ইউএনও স্যার, ডিসি স্যাররা মাঝেমধ্যে এখানে ঘুরতে এসে সামান্য খাবারের ব্যবস্থা করেন। আমরা চাই সরকারি বা বেসরকারিভাবে বানরগুলোর একটা গতি হোক।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শহিদুল্লাহ বলেন, বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করে যে পরিমাণ বরাদ্দ পাওয়া যায়, তা খুবই সামান্য। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ফরিদ আহমদ এলাকাটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে গেছেন।