হাইকোর্টে তারেকের ৭ বছরের কারাদণ্ড

অর্থ পাচার মামলার আপিলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তাঁকে ২০ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।

তারেকের ব্যবসায়ী বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া সাত বছরের কারাদণ্ডাদেশ আপিলে বহাল রয়েছে। তবে তাঁর জরিমানা ৪০ থেকে কমিয়ে ২০ কোটি টাকা করা হয়েছে।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এই রায় দেন।

মামলায় নিম্ন আদালত তারেককে খালাস দিয়েছিলেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মামুনকে নিম্ন আদালত সাত বছরের কারাদণ্ড ও ৪০ কোটি টাকা জরিমানা করেছিলেন। মামুনের আইনজীবীরা এই সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন।

দুটি আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ১৬ জুন হাইকোর্টের এই বেঞ্চ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন। আজ রায় ঘোষণা করা হলো।

দুদকের আইনজীবী জানিয়েছেন, রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

ঘুষ হিসেবে আদায়ের পর ২০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলাটি করে দুদক।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ অনুযায়ী, নির্মাণ কনস্ট্রাকশনস নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে টঙ্গীতে ৮০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০ কোটি টাকা ঘুষ নেন মামুন। ২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পদ্ধতিতে ওই টাকা সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকে মামুনের হিসাবে পাচার করা হয়। ওই হিসাব থেকে প্রায় পৌনে চার কোটি টাকা খরচ করেন তারেক।

২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ মো. মোতাহার হোসেন বিচার শেষে রায় ঘোষণা করেন। এতে তারেককে খালাস এবং মামুনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে মামুনকে ৪০ কোটি টাকা জরিমানাও হয়।

মামলার শুরু থেকে তারেক দেশে ছিলেন না। এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল থেকে মামুন কারাগারে।

২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর তারেকের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করে দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট দুদকের আপিল গ্রহণ করে তারেককে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। কিন্তু তারেক যুক্তরাজ্য থেকে না ফেরায় তাঁর বিরুদ্ধে সমন জারি করে তাঁর লন্ডনের ঠিকানায় পাঠানো হয়। এরপরও তারেক সাড়া না দেওয়ায় তাঁকে পলাতক ঘোষণা করেন আদালত। পরে গত ৪ মে হাইকোর্টে দুদকের আপিল ও কারাদণ্ডের সাজার বিরুদ্ধে মামুনের আপিলের একসঙ্গে শুনানি শুরু হয়।