রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাবে নাটক বন্ধ

তীরন্দাজ নাট্যদলের লেখা পোস্টার
তীরন্দাজ নাট্যদলের লেখা পোস্টার

মঞ্চনাটক শুরুর আগে ‘সুন্দরবনের ওপর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরূপ প্রভাব’ নিয়ে আলোচনার কথা ছিল। কিন্তু আগাম অনুমতি না নেওয়ায় তীরন্দাজ নাট্যদলের প্রদর্শনী বন্ধ করে দেয় শিল্পকলা একাডেমি। এ ঘটনায় নাট্যাঙ্গন ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
গত বুধবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে ছিল তীরন্দাজের নাটক কণ্ঠনালীতে সূর্য। নাটকের আগে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আনু মুহাম্মদের আলোচনা করার কথা ছিল। দুপুরে জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনের মঞ্চ ব্যবস্থাপক ফজলে রাব্বি দলটির সদস্যদের কাছে আলোচনার ভিডিও ধারণের ক্যামেরা ব্যবহারের লিখিত অনুমতি নিতে অনুরোধ করেন। অনুমতি নিতে গেলে শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও নাট্যশালার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী তাঁদের জানান, সুন্দরবন নিয়ে আলোচনা করা যাবে না। দলটির পরিচালক দীপক সুমন বলেন, ‘নাটকের আগে আলোচনা অনুষ্ঠানের জন্য আলাদা করে শিল্পকলার কাছে কোনো দিনই অনুমতি নিতে হয়নি। আজ সুন্দরবন নিয়ে আলোচনার জন্য কেন অনুমতি নিতে হবে? তারপরও আমরা অনুমতি নিতে গিয়েছিলাম, অনুমতি দেওয়া হয়নি।’
হাতে লেখা তীরন্দাজের পোস্টারে দেখা যায়, ‘“বাক বিতণ্ডা” সুন্দরবন নিয়ে আনু মুহাম্মদের সঙ্গে বাহাস। বাহাস শেষে সুন্দরবন চুরির প্রতিবাদে তীরন্দাজের নাটক কণ্ঠনালীতে সূর্য।’ বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে নাট্যকার মামুনুর রশীদ বলেন, ‘নাট্যমঞ্চে আমরা দীর্ঘ বাহাস করি না। এ জন্য আছে সেমিনার কক্ষ ও শহীদ মিনার। নাট্যমঞ্চগুলোকে আমরা এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখতে চাই।’

নাট্যমঞ্চে সুন্দরবন নিয়ে আলোচনা বন্ধ করায় শিল্পকলাকে সমর্থন দিলে এ নিয়ে মামুনুর রশীদের সঙ্গে কিঞ্চিৎ বাগ্‌বিতণ্ডা হয় নাট্যদলের কর্মীদের। বাগ্‌বিতণ্ডার সেই ভিডিওটি প্রকাশ করা হবে জানতে পেরে মামুনুর রশীদ গতকাল বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাকে নিয়ে তারা অনেক আপত্তিকর কথা বলেছে। ভিডিও প্রকাশ করলে যেন তারা পুরোটা করে। কিছু অংশ প্রকাশ করলে আমি আইনের আশ্রয় নেব। সুন্দরবন নিয়ে তারা নাটক করুক, দেখি কে ঠেকায়। কিন্তু এসব আলোচনা নাট্যশালায় কেন? সুন্দরবনের ব্যাপারে তো আমরা সবাই সোচ্চার।’ তিনি বলেন, আনু মুহাম্মদ সুন্দরবনের রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে কথা বলার জন্য যথাযোগ্য ব্যক্তি। কিন্তু তাঁর আলোচনাকে ‘বাহাস’ বলা হবে কেন? শব্দটার ভেতরে একটা হঠকারিতা আছে। জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, ‘সুন্দরবন নিয়ে আলোচনার অনুমতি না নেওয়ায় প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অনুমতি ছাড়াই অনুষ্ঠান চালিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জও ছুড়েছেন তাঁরা। নীতিমালা না মেনে অনুষ্ঠান করলে কর্তৃপক্ষ সেটা বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।’