ভিজিএফের সাড়ে তিন টন চাল আত্মসাৎ!

যশোরের অভয়নগর উপজেলার পায়রা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্যের বিরুদ্ধে দুস্থ ব্যক্তিদের বিতরণের জন্য আনা ভিজিএফের ৩ হাজার ৬৭৪ কেজি (সাড়ে তিন টন) চাল আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ওই ইউপি সদস্যের নাম আজিজুর রহমান গোলদার। গত বুধবার ১৩ জন ভুক্তভোগী তাঁর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকার দরিদ্র লোকদের মধ্যে বিনা মূল্যে জনপ্রতি ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়। পায়রা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাদিরপাড়া গ্রামে ৩৬৫টি পরিবারের জন্য ২০ কেজি করে মোট ৭ হাজার ৩০০ কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঈদের আগে ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান গোলদার চাল উত্তোলন করেন। তিনি উত্তোলন করা চাল থেকে ২০৯টি পরিবারের মধ্যে ৩ হাজার ৬২৬ কেজি চাল বিতরণ করেন। পরিবারগুলোকে ২০ কেজির পরিবর্তে ৮ থেকে ১৯ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। ১৫৬টি পরিবারকে কোনো চালই দেওয়া হয়নি। আজিজুর রহমান মোট ৩ হাজার ৬৭৪ কেজি চাল আত্মসাৎ করেছেন।
ওই অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন কাদিরপাড়া গ্রামের এস এম রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গ্রামের অনেক দুস্থ ব্যক্তি ভিজিএফের চাল পাননি। যারা চাল পেয়েছে, তাদেরও চাল কম দেওয়া হয়েছে। এসব চাল মেম্বার আজিজুর আত্মসাৎ করেছেন।’
গত শনিবার কাদিরপাড়া গ্রামে গিয়ে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা হয়। মোমেনা বেগম বলেন, ‘আমার জমি-জায়গা নাই। অন্যের জমিতে ঘর বেঁধে থাকি। মেম্বার আমাকে চাল দেয়নি।’ ফিরোজা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী নাই। মেয়েকে নিয়ে ব্র্যাকের তৈরি করা বাড়িতে থাকি। কাজকর্ম করতে পারি না। আমি চাল পাইনি।’ দিনমজুর মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ‘আমি পরের খেতে মজুরের কাজ করি। মেম্বারের কাছে ভিজিএফের চাল চেয়েছিলাম। তিনি বলেছেন, “তুমি আমাকে ভোট দাওনি, তোমাকে চাল দেওয়া যাবে না”।’ মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমাকে মাত্র ১১ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে।’
ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান গোলদার বলেন, ‘চাল আত্মসাতের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার বিপক্ষে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে হেরে যাওয়া প্রার্থীরা এক জোট হয়ে আমাকে হেয় করার জন্য ভিজিএফ নিয়ে মিথ্যাচার করছেন।’
ইউএনও মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন মিয়া বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি অনেক আগের। তাঁরা অনেক পরে এসে জানিয়েছেন। তারপরও তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’