স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক নির্মাণ

জয়বাংলা বাজার থেকে দর্গাবাড়ির মসজিদ পর্যন্ত বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। গতকাল তোলা ছবি l প্রথম আলো
জয়বাংলা বাজার থেকে দর্গাবাড়ির মসজিদ পর্যন্ত বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। গতকাল তোলা ছবি l প্রথম আলো

দুই কিলোমিটার মাটির রাস্তা। ওই রাস্তাটি দিয়েই তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষের চলাচল। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় সাত বছর পর্যন্ত চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী ছিল রাস্তাটি। স্থানীয় ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যানদের দ্বারস্থ হলেও কোনো লাভ হয়নি। এ কারণে এলাকাবাসী চাঁদা তুলে রাস্তাটির নির্মাণকাজ শুরু করেছে। গত শনি, রবি ও গতকাল সোমবার এই তিন দিনে বালি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে।
এমন চিত্র পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে কাছিপাড়া ইউনিয়নের পাকডাল গ্রামের একটি রাস্তার।
গতকাল সোমবার দুপুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাকডাল গ্রামের জয় বাংলা বাজার থেকে দর্গাবাড়ির মসজিদ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার মাটির রাস্তাটি প্রায় সাত বছর ধরে চলাচলের অনুপযোগী ছিল। ওই দুই কিলোমিটার রাস্তা দিয়েই ৫ নম্বর পাকডাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকডাল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও শেখ ছত্তার আলী মিয়াজী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের দেড় হাজারের বেশি শিক্ষার্থীসহ ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে। বর্ষা মৌসুমে, বিশেষ করে শিশু ও নারীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়। রাস্তাটি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও কোনো জনপ্রতিনিধি রাস্তাটির উন্নয়নে এগিয়ে আসেননি। এ কারণে এলাকাবাসী চাঁদা তুলে রাস্তাটি নির্মাণের কাজ শুরু করে।
কামরুল ইসলাম (৪০) নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘নির্বাচন আইলে প্রার্থীরা রাস্তাটি কইরা দেওনের কথা কইলেও অইয়া (নির্বাচিত) যাওনের পর আর হেই কথা মনে থাহে না। হেইয়ার লাইগা আমরা চাঁদা তুইলা বালু দিয়া ভরছি (ভরাট)। এহন চলন যাইব। আস্তে আস্তে আবার পাকাও করমু। তয় আগামী ভোটের সময় সোনাগোরে (প্রার্থী) উচিত শিক্ষা দেওনের পর ভোট দিমু।’
সিয়াম, শোয়েব, ইতি নামে পাকডাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী বলে, ‘বৃষ্টির সময় রাস্তায় অনেক কাদা থাকে। হেই সময় তাদের বিদ্যালয়ে যাইতে-আইতে অনেক কষ্ট অইত। এহন আর কষ্ট অইবে না।’
কাছিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘মাত্র ক্ষমতা গ্রহণ করেছি। যেহেতু এলাকাবাসী বালু ভরাট করে ফেলেছে। তাই আমি পাকা করে দেওয়ার চেষ্টা করব।’