সাইয়িদের বিরুদ্ধে নিজের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা, গ্রেপ্তার ১

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা সদরে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদের একটি বাড়ি তিনি নিজেই ভাঙচুর চালিয়েছেন—এই অভিযোগে মামলা হয়েছে। গত শনিবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সাইয়িদকে প্রধান করে ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে এই মামলার আসামি করে হয়েছে।
এএলাকাবাসী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বাড়িটি আবু সাইয়িদের—এটা সবাই জানেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে বাড়িটি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছিল। আবু সাইয়িদ বহুবার এই কার্যালয়ে এসে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হকের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পাবনা-১ (বেড়া-সাঁথিয়া) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে নিজের নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য তিনি বাড়িটি ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সমর্থকেরা এতে রাজি হচ্ছিলেন না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বেলা তিনটার দিকে সাইয়িদ লোকজন নিয়ে বাড়িটিতে হাজির হন। তিনি বাড়ির বিভিন্ন দিক ঘুরে দেখেন ও বাড়িটি নিজের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য তালাবদ্ধ করে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পরই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হকের সমর্থকেরা এসে তালা খুলে ভাঙচুরের অভিযোগ তোলেন। শামসুল হকের সমর্থকদের দাবি, আবু সাইয়িদ ও তাঁর লোকজন ভেতরে ভাঙচুর চালিয়ে বাড়িটিতে তালা দিয়েছিলেন।
এ প্রসঙ্গে আবু সাইয়িদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বাড়িতে আমি ভাঙচুর চালিয়েছি, অভিযোগটি হাস্যকর। আমি গত পাঁচ বছর বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় বাড়িটি অরক্ষিত হয়ে পড়েছিল। এ সুযোগে একটি মহল সেখানে আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের চাল-গম আত্মসাৎ করেছে। আমি এলাকায় ফিরে বাড়িটি নিজের তত্ত্বাবধানে নিতে চেয়েছি। কিন্তু নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে আমার প্রতিপক্ষ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা খাটিয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা করে আমাকে হয়রানি করার চেষ্টা করছে।’
তবে আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, আবু সাইয়িদের নেতৃত্বে আসামিরা এসে কার্যালয়টিতে ভাঙচুর করেছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতির অবমাননা করেছেন। এ কারণে তিনি ওই মামলা করেছেন।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদ মাহমুদ বলেন, ‘বাড়িটি যে আবু সাইয়িদের, তা আমাদের জানা নেই। আমরা জানি, ওটা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়। কার্যালয়টি ভাঙচুরের অভিযোগেই মামলা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। আসামিদের ধরতেও অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই উপজেলার শানিলা গ্রাম থেকে আরিফুল ইসলাম (২১) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’