গৌরবের ৫৫ বছর পার করল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

কৃষিশিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণের বিদ্যাপীঠ হিসেবে ১৯৬১ সালের এই দিনে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের প্রথম উচ্চতর কৃষিশিক্ষা ও গবেষণার পথিকৃৎ এ বিশ্ববিদ্যালয় ৫৫ বছরের গৌরবময় যাত্রাপথ অতিক্রম করে আজ ১৮ আগস্ট পা দিচ্ছে ৫৬ বছরে। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হবে। এ ছাড়া বৃক্ষরোপণ, চারা বিতরণ ও মাছের পোনা ছাড়ার কর্মসূচিও গ্রহণ করা হয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে ১ হাজার ২০০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে এ ক্যাম্পাস। হাজার প্রজাতির গাছে ঘেরা এই প্রাঙ্গণে সর্বক্ষণ শোনা যায় পাখির কিচিরমিচির। এ পর্যন্ত ৪৪ হাজারের বেশি কৃষিবিদ তৈরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
এখানে কৃষি, ভেটেরিনারি, পশুপালন, কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান, কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি এবং মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের আওতায় ৪৩ বিভাগে সেমিস্টার পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে ৬ হাজার ১৯৮ জন শিক্ষার্থী ও ৫৭০ জন শিক্ষক রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য রয়েছে ১৩টি হল।
৫৫ বছরের পথচলায় এসেছে বহু সাফল্য। বাউকুল, ধান, সরিষা, সয়াবিন, আলু, মুখিকচুর বেশ কয়েকটি করে জাত উদ্ভাবন করেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। মাছ ও সবজি সমন্বিত চাষ প্রযুক্তি, কচি গমের পাউডার উত্পাদন, নিরাপদ শুঁটকি তৈরির টানেল, বিদ্যুৎবিহীন হিমাগার, গাভির ওলান প্রদাহ রোগনির্ণয় পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে এখানে। কলা ও আনারস উত্পাদনের উন্নত প্রযুক্তি, শুকনা পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষ প্রযুক্তি, জৈব সার উৎপাদন প্রযুক্তি, মাটি পরীক্ষার সরঞ্জাম, গবাদিপশুর ভ্রূণ প্রতিস্থাপন, মাছের রোগ প্রতিরোধকল্পে ঔষধি গাছের ব্যবহার ও হাওর এলাকায় হাঁস পালনের কলাকৌশল উদ্ভাবন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। তারাবাইম, গুচিবাইম, বড় বাইম, কুঁচিয়া, গাঙ মাগুর ও বাটা মাছের কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতিও আবিষ্কার করা হয়েছে। এখানকার জার্মপ্লাজম সেন্টারটি দাঁড়িয়ে আছে একটা পরিণত গাছের মতো, যার ফল ভোগ করছে গোটা বাংলাদেশ। এই সেন্টার ৯০টির বেশি ফলের জাত উদ্ভাবন করেছে।
উপাচার্য অধ্যাপক মো. আলী আকবর বলেন, ‘খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে খাদ্যনিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত। অধিকতর গবেষণা ও নতুন প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য আরও কার্যকর ও ত্বরান্বিত করাই বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে আমাদের প্রত্যাশা।’