পূর্ত কাজ করে দেবে নৌ-কল্যাণ ফাউন্ডেশন ট্রেডিং কোম্পানি

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গন্ডামারায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পূর্ত কাজ করে দেবে নৌ-কল্যাণ ফাউন্ডেশন ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এস এস পাওয়ার লিমিটেড ও চীনের দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে ২৫০ কোটি ডলার ব্যয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।

নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্যানডং তাইজুন ইলেকট্রিক পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে ৫ আগস্ট ঢাকায় নৌ সদর দপ্তরে নৌ-কল্যাণ ফাউন্ডেশন ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৯ সালের মধ্যে কেন্দ্রটিতে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা। এর উৎপাদনক্ষমতা হবে প্রায় ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট।

এস আলম গ্রুপের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন নৌ-কল্যাণ ফাউন্ডেশন ট্রেডিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর (অব.) সৈয়দ ইরশাদ আহমদ এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ওয়াং জিয়াং। ওই অনুষ্ঠানে নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদ এবং এস আলম গ্রুপের পরিচালক শহীদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

নৌ-কল্যাণ ফাউন্ডেশন ট্রেডিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর (অব.) সৈয়দ ইরশাদ আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাঁশখালীর বিদ্যুৎ প্লান্ট (কেন্দ্র) নির্মাণ করার জন্য আমাদের সঙ্গে এমওইউ হয়েছে। আমরা জয়েন্টলি (যৌথভাবে) প্ল্যান্ট নির্মাণের কাজ করব।’

এর আগে গত ১৩ জুন ৫৯টি শর্তে এই প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষার (ইআইএ) ছাড়পত্র দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। গত বছরের আগস্ট মাসে পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে এস আলম গ্রুপ এই প্রকল্পের জায়গার ছাড়পত্র (সাইট ক্লিয়ারেন্স) এবং ইআইএ ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছিল।

 সমঝোতা স্মারকে ৩২টি শর্ত রয়েছে বলে জানালেও এসব শর্তগুলো কী তা স্পষ্ট করে বলতে চাননি এস আলম গ্রুপের পরিচালক আবদুস সামাদ। তিনি বলেন, বর্ষা শেষে দ্রুত বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে।

গত ৪ এপ্রিল গন্ডামারায় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পক্ষে-বিপক্ষের লোকজন ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে দুই ভাইসহ চারজন নিহত হন। পরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে এলাকায় আন্দোলন গড়ে ওঠে। গন্ডমারার ‘বসতভিটা ও গোরস্থান রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে এই আন্দোলন শুরু হয়। এই কমিটির আহ্বায়ক গন্ডামারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শুরু হওয়ার বিষয়ে লিয়াকত আলী মুঠোফোনে প্রথম আলোকেবলেন, ‘কাকে দিয়ে কাজ করাচ্ছে, সেটা আমাদের বিষয় না। তবে পরিবেশ অধিদপ্তর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ৫৯টি শর্ত দিয়েছে। সেই শর্ত ওপেন (উন্মুক্ত) করা হোক। তখন আমরা বুঝব, শর্তগুলো এলাকাবাসীর জন্য সহায়ক, নাকি বিরুদ্ধে। তারপর আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’