হত্যার কথা স্বীকার করলেন আসামি তাহের

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বীর সিংহপাড়া গ্রামে মা-মেয়েসহ তিনজনকে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলার আসামি তাহের উদ্দিন হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বুধবার তাঁকে হবিগঞ্জের বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হলে তিনি এ জবানবন্দি দেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বীর সিংহপাড়া গ্রামে জাহানারা বেগম, তাঁর মেয়ে শারিমন আক্তার ও তাঁদের প্রতিবেশী শিমুল মিয়া হত্যার শিকার হন। তাঁদের হত্যার অভিযোগে স্থানীয় লোকজন জাহানারার দেবর তাহেরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। এ ঘটনায় নিহত জাহানারার ভগ্নিপতি মোহন মিয়া বাদী হয়ে মাধবপুর থানায় তাহেরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। আজ ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ। বেলা দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সামসাদ বেগম আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকতাদির হোসেন ও হবিগঞ্জ আদালতের পরিদর্শক কাজী কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আসামি তাহের হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে বলেছেন, তিনি ১০ বছর কুয়েত ছিলেন। কুয়েত থাকা অবস্থায় তিনি তাঁর ভাবি জাহানারার কাছে বিভিন্ন সময় ২২ লাখ টাকা পাঠান। সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরে এসে ভাবির কাছে ওই টাকাগুলো দাবি করেন। কিন্তু তাঁর ভাবি ওই টাকা দিতে টালবাহানা করতে থাকেন। এ ছাড়া সম্প্রতি তিনি জায়গাজমি বিক্রি করে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য এক ব্যক্তির কাছে টাকা দেন। এতে তিনি প্রতারিত হন। এ নিয়েও জাহানারা তাঁকে উদ্দেশ করে প্রায় সময়ই কটূক্তি করেন। গতকালও এ নিয়ে কটূক্তি করলে তিনি ভাবিকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। প্রস্তুতি হিসেবে তিনি একটি ধারালো ছুরি নেন। প্রথমেই তিনি তাঁর ভাবির কাছে পাওনা টাকা ফেরত চান। এ সময় ভাবি টাকা দিতে অসম্মতি জানালে তিনি ধারালো ছুরি দিয়ে জাহানারাকে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করেন। এ সময় জাহানারার মেয়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা শারমিন ও প্রতিবেশী শিমুল এগিয়ে গেলে তাঁদেরও হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর তিনি পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে আটক করে পুলিশের সোপর্দ করেন।
পুলিশ জানায়, জবানবন্দি গ্রহণ শেষে বিচারক তাহেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আজ নিহত তিনজনের লাশের ময়নাতদন্ত হবিগঞ্জ জেলা আধুনিক হাসপাতালের মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। আজ রাতে নিহত তিনজনের লাশ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। জানাজা শেষে তিনজনকেই গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।