আদালতে মায়ের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় শিশু সুখমণির (৪) গলাকাটা লাশ উদ্ধারের তিন দিন পর দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মা মতিজান বেগম (৪৮)। গত বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়া গুচ্ছগ্রাম-সংলগ্ন একটি বাঁশঝাড় থেকে সুখমণির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সুখমণির বাবা ওই গ্রামের ইনছান আলীকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইনছান বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুখমণির মা মতিজানকে পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে শুক্রবার রাতে মতিজানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেন। পরে তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শিশুর গলাকাটায় ব্যবহৃত কাঁচি-দা রক্তমাখা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। পরে শনিবার বিকেলে নীলফামারী বিচারিক হাকিম আদালতে হত্যার বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মতিজান।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিমলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, শনিবার বিকেলে মতিজান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে রাতে এ ঘটনায় মামলার বাদী ইনছানকে গ্রেপ্তার করে গতকাল রোববার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

নীলফামারী সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ফিরোজ কবির বলেন, মতিজান আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, তিনি তাঁর একমাত্র ছেলে ইয়াছিন আলীকে (২) ভালোবাসতেন। গত বুধবার সুখমণি খেলার সময় তার ছোট ভাই ইয়াছিনকে মারধর করলে সে (ইয়াছিন) কান্নাকাটি করতে থাকে। এতে বিরক্ত হয়ে তিনি সুখমণির গলা টিপে ধরেন, এতে সুখমণির মৃত্যু হয়। এ সময় তার অপর মেয়ে আয়শা সিদ্দিকা (১০) বিদ্যালয়ে ছিল। পরে স্বামী ইনছান বাড়িতে এলে স্বামী-স্ত্রী পরামর্শ করে নিজেদের বাঁচানোর জন্য সুখমণির লাশ গোয়ালঘরে বস্তা দিয়ে ঢেকে লুকিয়ে রাখেন। সেদিনই সন্ধ্যার পর স্বামী-স্ত্রী মিলে কাঁচি-দা দিয়ে সুখমণির গলা কেটে বস্তায় ভরে বাড়ির অদূরে বাঁশঝাড়ের নালায় ফেলে দেন। রাত ১০টার দিকে দুজনে সেখানে গিয়ে সুখমণির গলাকাটা লাশ পাওয়া গেছে বলে চিৎকার শুরু করেন।

ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ইনছান আলী বাদী হলেও এখন তিনি ওই মামলার আসামি। স্বামী-স্ত্রীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।