'তার ১৪ বার ফাঁসি হওয়া উচিত'

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মামলার চার সাক্ষী। ‘তার একবার না, ১৪ বার ফাঁসি হওয়া উচিত’ বলে মন্তব্য করেছেন মৃদুল দে নামের এক সাক্ষী।

আজ মঙ্গলবার সকালে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদন খারিজ করেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

মীর কাসেম আলীর মামলার অন্যতম সাক্ষী নগরের হাজারিগলির বাসিন্দা মৃদুল দে। রায়ের পর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে প্রৌঢ় মৃদুল বলেন, ‘হাজারিগলি হিন্দু-অধ্যুষিত এলাকা। একাত্তরে মীর কাসেম আলী এই এলাকাকে টার্গেট করে। আমার চোখের সামনে টুন্টু দাস ও রঞ্জিত দাসকে ডালিম ভবনে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাদের হত্যা করে। বিচারে আমরা খুশি। তার (মীর কাসেম) একবার না, ১৪ বার ফাঁসি হওয়া উচিত।’

কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম হত্যায় মৃত্যুদণ্ড হয় মীর কাসেমের। জসিমের মামাতো বোন চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধা হাসিনা খাতুন। বলেন, ‘সঠিক বিচার হয়েছে। এখন আমি খুব খুশি। আমার ভাই জসিমকে সে (মীর কাসেম) ধরে নিয়ে হত্যা করেছে। আমার বাসা থেকে বের হওয়ার পরই জসিমকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। রায় দ্রুত কার্যকর চাই।’

অপর সাক্ষী জাহাঙ্গীর চৌধুরী সকাল থেকেই মাদারবাড়ির নিজ দপ্তরে বসে গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে রায়ের পর শুভেচ্ছা বিনিময় এবং কথা বলছিলেন। তিনি প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আজ আমার খুশির দিন। তবে আমার মা ও ভাই বেঁচে থাকলে অনেক বেশি খুশি হতাম। তাঁরা মীর কাসেমের রায় দেখে যেতে পারেননি। আমার মা সেদিন খুব কেঁদেছিলেন।’

জাহাঙ্গীর চৌধুরীকে ১৯৭১ সালের রোজার ঈদের দুই দিন পর ধরে নিয়ে যাওয়া হয় ডালিম হোটেলে। ১৬ ডিসেম্বর তিনি মুক্ত হন।

যুদ্ধকালীন সময়ে গঠিত বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সের (বিএলএফ) চট্টগ্রাম নগর কমান্ডার সৈয়দ মো. এমরানের আপন ও চাচাতো ছয় ভাইকে ৩০ নভেম্বর ডালিম হোটেলে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁদের অকথ্য নির্যাতন করা হয়। মো. এমরান ও তাঁর দুই চাচাতো ভাই মো. জামাল উদ্দিন ও সরওয়ার উদ্দিন এই মামলার সাক্ষী।

মো. এমরান এখন অসুস্থ। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘যে রায় প্রত্যাশা করেছিলাম, সেটি পেয়েছি। এখন যত দ্রুত রায় কার্যকর হয়, ততই মঙ্গল।’

আরও পড়ুন: