শেরপুর কুমিল্লায় জামায়াত ও শিবিরের ২২ জন আটক

নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির অভিযোগে শেরপুর ও কুমিল্লায় জামায়াত-শিবিরের ২২ জন কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল বুধবার বিকেলে শেরপুর জেলা শহরের গৌরীপুর এলাকার একটি বাসা থেকে ১১ জনকে আটক করা হয়। পুলিশ তাঁদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ধর্মীয় বই, প্রচারপত্র, চাঁদা আদায়ের রসিদ ও সংগঠন পরিচালনার কাগজপত্র জব্দ করে। অন্যদিকে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার উপজেলার ইউসুফপুর এলাকা থেকে জামায়াত-শিবিরের ১১ জন সশস্ত্র ক্যাডারকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ১৬টি জিআই পাইপ ও পেট্রলভর্তি প্লাস্টিকের আটটি বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। শেরপুরের আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন নালিতাবাড়ী উপজেলার রাজনগর গ্রামের আমিনুল রসুল, নন্নী আমবাগান গ্রামের সাইফুল্লাহ, দাওয়াকুড়া গ্রামের ইমরুল ইসলাম ও বালুঘাটা গ্রামের মো. রানা, শেরপুর সদর উপজেলার খরমপুর এলাকার মো. সেলিম, মোকছেদপুর নয়াপাড়া গ্রামের শাহীন মিয়া ও তাতালপুর গ্রামের মানিক মিয়া; ঝিনাইগাতী উপজেলার ঘাগড়া প্রধানপাড়া গ্রামের মো. শিহাব, একই গ্রামের আরাফাত হোসেন ও বনগাঁও গ্রামের মোজাহিদুল ইসলাম; জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার নিলক্ষিয়া গ্রামের শফিকুর রহমান।
একই বাসা থেকে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দলদিঘী সরকারপাড়া গ্রামের রতন কুমার রায়ের ছেলে দীপক কুমার রায়কে আটক করা হয়েছে। দীপক বলেন, তিনিও ওই কলেজের ছাত্র। একটি পরীক্ষা দিতে এসে কয়েক দিনের জন্য ওই বাসায় ওঠেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে শিবিরের কর্মীরা একত্র হয়ে বৈঠক করছেন—এমন তথ্যের ভিত্তিতে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিবুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা গতকাল বিকেল চারটার দিকে শহরের গৌরীপুর এলাকার বাসিন্দা ও ঝিনাইগাতী উপজেলার তিনআনী আদর্শ দাখিল মাদরাসার শিক্ষক মো. আবদুল মান্নানের বাসায় অভিযান চালান। শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিবুল ইসলাম খান গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
দেবীদ্বারে আটককৃতরা হলেন কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বালিনা গ্রামের ফারুক আহমেদ, শাহাদত আলী, পুমখারা গ্রামের আরিফুল ইমাম, উত্তর চান্দলা গ্রামের হাসান মিয়া, টাকই গ্রামের কাউছার মিয়া, দুলালপুর গ্রামের ইয়াকুব আলী, ওমর ফারুক, আবু ইউছুফ, শেখ রাসেল, ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বাহাদুরনগর গ্রামের বাকি বিল্লাহ ও কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার তাকারা গ্রামের আইয়ুব খান।
দেবীদ্বার থানার এসআই শ্যামল চক্রবর্তী বাদী হয়ে আটক ১১ জনসহ ৪০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০-১৬০ জনকে আসামি করে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করেছেন। ওসি তারেক মো. আবদুল হান্নান বলেন, বুধবার সকালে ইউসুফপুর এলাকায় হরতালের সমর্থনে জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা সড়ক অবরোধ করে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা করে। ওই সময়ে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় ১১ জনকে আটক করা হয়।