কোরবানির হাটে দেশি গরুর কদর বেশি

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় কোরবানির পশুর হাট জমে উঠেছে। তবে হাটে স্থানীয় গৃহস্থের গরু নেই বললেই চলে। ভটভটি, টেম্পো, ট্রাকে করে বিভিন্ন উপজেলা থেকে মোটাতাজা গরু আনা হচ্ছে। এসব গরু কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের তেমন আগ্রহ নেই। ক্রেতারা বেশি দাম দিয়ে কিনছেন দেশি গরু। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
গত শুক্রবার তারাগঞ্জ গরুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, ৮-৯ হাজার গরু বিক্রির জন্য বাজারে আনা হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই মোটাতাজা করা।
ওই হাটে কয়েকজন ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত পাইকারেরা ঈদুল আজহা সামনে রেখে এসব গরু নিয়ে এসেছেন অধিক লাভের আশা। এ ছাড়া স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ী গ্রাম থেকে দুর্বল গরু কিনে ক্ষতিকর বিভিন্ন বড়ি ও ইনজেকশন প্রয়োগ করে অল্প সময়ের মধ্যে মোটাতাজা করে বাজারে তুলছেন। এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে ক্রেতারা অবগত হয়ে এসব গরু কেনার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। বেশি দাম হলেও তাঁরা দেশি গরু কিনছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাঝাপাড়া গ্রামের এক গরু ব্যবসায়ী বলেন, দুই মাস আগে একটি দুর্বল গরু কিনে তিনি লালনপালন করেন। গ্রাম্য পশুচিকিৎসকের পরামর্শে অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি তিনি গরুকে খাইয়েছেন বিভিন্ন বড়ি। এতে ওই গরু মোটাতাজা হয়ে যায়। তিনি আশা করেছিলেন এখন দাম ভালো পাবেন। কিন্তু হয়েছে উল্টো। তিনি গত সোমবার এ গরু তারাগঞ্জ হাটে এনে বিক্রি করতে না পেয়ে বাড়িতে ফেরত নিয়ে গেছেন। আবারও গত শুক্রবার বিক্রির জন্য এ গরু তারাগঞ্জ হাটে তোলা হলেও ক্রেতা এ গরু কিনতে অনীহ দেখাচ্ছেন। এমন দাম বলছেন, তাতে লাভ তো দূরে থাক, খরচই উঠবে না।
ঝাঁকুয়াপাড়া গ্রামের গরুর পাইকার খন্দকার লেমন বলেন, ‘মুই শুক্রবার তারাগঞ্জের হাটোত দুকনা গরু বেচার জৈন্যে নিয়া গেছনু। মোর গরু স্বাস্থ্যবান মোটা দেখি কায়ও দাম করে নাই। সবায় খালি দেশি গরু খোঁজে।’
বরাতি গ্রামের ইকরামুল হক বলেন, ‘ভেজাল বড়ি খিলি মোটাতাজা করা গরুর কলিজা পচি যায়। মাংস খাইলেও সমস্যা হয়। টাকা দিয়া কোরবানির জন্য ভেজাল গরু কিনমো কেন? চার হাট ঘুরি এক গৃহস্থের দেশি গরু কিনেছি।’
তারাগঞ্জ হাটের ইজারাদার নুরুল ইসলাম বলেন, কোরবানির হাট জমে উঠলেও বেচাকেনা কম। ক্রেতারা মোটাতাজা করা গরু কিনছেন না। তাঁরা দেশি গরু কিনছেন। গতবার যে দেশি গরু বিক্রি হয়েছে ২০ হাজার টাকায় তা এবার বিক্রি হচ্ছে ২৩-২৪ হাজার টাকায়।