পুলিশ প্রহরার মধ্যেই ট্রাইব্যুনাল বিচারপতির বাড়িতে ককটেল

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারপতি ফজলে কবীরের  চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার চামা গ্রামের বাড়িতে গতকাল বুধবার ককটেল হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। রাত সোয়া একটার দিকে ওই বাড়িতে চারটি ককটেল ছোড়া হয়।

বিচারপতির ভাই গোলাম কবীর বুলু প্রথম আলো ডটকমকে জানান, দুর্বৃত্তরা বাড়িতে পর পর চারটি ককটেলের বিস্ফোরণ করে জানালায় পেট্রল ঢেলে আগুন দেয়। আগুনে দুটি জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি জানান, বিচারপতি ফজলে কবীর ঢাকায় অবস্থান করার পর থেকে এ বাড়িতে কেউ থাকেন না।

এলাকাবাসী জানায়, বিচারপতি ফজলে কবীর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তাঁর বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। গতকাল দুর্বৃত্তদের হামলার সময় সেখানে ছয়জন পুলিশ সদস্য দায়িত্বরত অবস্থায় ছিলেন। কিন্তু পুলিশ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুর্বৃত্তরা হামলা করে পালিয়ে যায়।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীমউদ্দিন প্রথম আলো ডটকমকে হামলার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে জেলার পুলিশ সুপার বশির আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বিচারপতির গ্রামের বাড়িতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বিচারপতি ফজলে কবীর একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের সাজার রায় দিয়েছেন। এই ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে করা মামলার রায় অপেক্ষাধীন আছে। এ ছাড়া জামায়াত নেতা এ টি এম আজহার ও আবদুস সুবহানের মামলার কার্যক্রম চলছে।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া কাদের মোল্লার বিচারকাজ যখন শুরু হয়, তখন বিচারপতি ফজলে কবীর ট্রাইব্যুনাল-২-এ দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি ট্রাইব্যুনাল-১-এ দায়িত্ব পালন শুরু করেন।

গতকাল বুধবার ভোরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এস কে সিনহার মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার তিলকপুর গ্রামের বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় বাড়িতে কেউ ছিল না। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদানকারী আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের অন্যতম ছিলেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এস কে সিনহা)।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ওই রায় ঘোষণা করেন।