ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয় যেন আরেক কলসিন্দুর

ময়মনসিংহের ক​লসিন্দুরের মেয়েদের মতোই অদম্য ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয়ের এই কিশোরী ফুটব​লারেরা। জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উপ–অঞ্চল পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। এখন স্বপ্ন কলসিন্দুরকে হারিয়ে জাতীয় পর্যায়ে শিরোপা জেতা। সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের এই মেয়েরাও বহুদূর যেতে চায়। ছবিটি ৯ সেপ্টেম্বর সকালে বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে তোলা l সুপ্রিয় চাকমা
ময়মনসিংহের ক​লসিন্দুরের মেয়েদের মতোই অদম্য ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয়ের এই কিশোরী ফুটব​লারেরা। জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উপ–অঞ্চল পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। এখন স্বপ্ন কলসিন্দুরকে হারিয়ে জাতীয় পর্যায়ে শিরোপা জেতা। সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের এই মেয়েরাও বহুদূর যেতে চায়। ছবিটি ৯ সেপ্টেম্বর সকালে বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে তোলা l সুপ্রিয় চাকমা

ফুটবল খেলে ময়মনসিংহের কলসিন্দুরের মেয়েরা চমকে দিয়েছে সারা দেশের মানুষকে। একই ধরনের প্রতিভা থাকলেও প্রচারের আলো পড়েনি ঘ​াগড়া উচ্চবিদ্যালয়ের কিশোরী ফুটবলারদের ওপর।

জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০১৬ রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয় বালিকা ফুটবল দল তৃতীয়বারের মতো উপ-অঞ্চল (বকুল) চ্যাম্পিয়ন হয়ে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করেছে। বিগত তিন বছর দলটি কলসিন্দুরের মেয়েদের কাছে হেরে জাতীয়ভাবে রানার্সআপ হয়েছিল। এবার চ্যাম্পিয়ন হতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তারা।

৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ‘বকুল’ উপ-অঞ্চলের চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট বিভাগের চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে খেলা অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল মাঠে। প্রতিযোগিতার ফাইনালে ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয় সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার রাজানগর উপজেলার মেহেরুন্নেছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয় দলকে ৬-০ গোলে পরাজিত করে উপ-অঞ্চল চ্যাম্পিয়ন হয়।

ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয় বালিকা ফুটবল দলের কোচ শান্তি মণি চাকমা জানান, তঁার দল এর আগে ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে জাতীয় প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল। এই দলের আনুচিং মগিনি, আনাইচিং মগিনি ও মনিকা চাকমা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব ১৬ বালিকা ফুটবল টুর্নামেন্টে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছে।

শান্তি মণি চাকমা জানান, ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয় বালিকা ফুটবল দলের খেলোয়াড়দের নানা প্রতিকূলতার মধ্যে অনুশীলন করতে হয়। তারা সবাই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। কয়েকজন খেলোয়াড় ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত একটি ভবনে গাদাগাদি করে থাকে। আর অন্য খেলোয়াড়দের প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে অনুশীলনে আসতে হয়। অনুশীলনের পর ভালো খাবারও দিতে পারেন না। তারপরও তাঁর দল গত দুই বছর জাতীয় রানার্সআপ হয়েছে। এবার সবাই চ্যাম্পিয়ন হতে না পারার সেই দুঃখ ঘোচাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সেভাবে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে বালিকা ফুটবলারেরা।

দলের সদস্যরা হলো রূপনা চাকমা, মনিকা চাকমা, আনুচিং মগিনি, আনাইচিং মগিনি, মাউচাই মারমা, সুইনুচিং মারমা, জিতা চাকমা, বীথি চাকমা, মলিনি চাকমা, উমেচিং মারমা, তন্নি দেওয়ান, রিয়া চাকমা, থুইমা মারমা, চম্পা চাকমা, উনুপ্রু মারমা ও ইহা চিং মারমা।