লোহার অ্যাঙ্গেল বিঁধে বাস এফোঁড়-ওফোঁড়, ২ জনের মৃত্যু

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় লরিতে বহন করা ৩০ ফুট লম্বা লোহার অ্যাঙ্গেল চলন্ত বাসে বিঁধে দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বাসের ২৪ যাত্রী। চারকোনা এই অ্যাঙ্গেলটি বাসচালকের পেছনের আসনের জানালা দিয়ে ঢুকে বাসটির শেষ মাথা দিয়ে বের হয়ে যায়।

নিহত যাত্রীরা হলেন রংপুর সদর থানার পীরপুর এলাকার মৃত শমশের আলীর মেয়ে মোহনা খাতুন (১৭) ও একই জেলার গঙ্গাচরা থানার এজাজুল ইসলামের স্ত্রী রওশন আরা বেগম (২৭)।
ঢাকা-উত্তরবঙ্গগামী মহাসড়কে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর এলাকায় মির্জাপুর-রানীরহাট মোড়ে গতকাল রোববার দিবাগত রাত আড়াইটায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ওই সময় দুর্ঘটনাকবলিত ইউনাইটেড পরিবহন নামের যাত্রীবাহী বাস ঢাকার দিকে এবং বিপরীতমুখী লোহার অ্যাঙ্গেল বহন করা লরিটি উত্তরবঙ্গের দিকে যাচ্ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যাত্রীবাহী বাস ও লরির এই সংঘর্ষের সময় পাশ দিয়ে যাচ্ছিল সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা। এ সময় বাসে বিঁধে যাওয়া লোহার অ্যাঙ্গেলটি বাস ফুটো করে পড়ে যায় অটোরিকশার ওপর। এতে ওই অটোরিকশার চালকও আহত হন।
দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, চলন্ত অবস্থায় ওই লরিতে রাখা লোহার অ্যাঙ্গেলটি বাসের চালকের পেছনের আসন দিয়ে বিঁধে বের হয় বাসটির সবচেয়ে পেছনের আসন দিয়ে। এতে বাসটির চালকের পেছনের আসন থেকে শেষের আসন পর্যন্ত বসা সব যাত্রীই হতাহতের শিকার হন।

শেরপুর থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) এবাদ আলী মোল্লা বলেন, ঘটনাস্থলে নিহত মোহনা খাতুন তার মা পোশাক কারখানার শ্রমিক ময়না বেওয়াকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিল। রওশন আরা বেগম তাঁর স্বামী এজাজুল ইসলামের সঙ্গে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। আজ সোমবার সকাল ছয়টায় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রওশন আরা বেগম মারা যান। আহত সবাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনার পর দ্রুত পালিয়ে যাওয়া লরিটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে দুর্ঘটনার শিকার বাসটিকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত বাসযাত্রী মোহনা খাতুনের মামা হীরা শেখ বাদী হয়ে আজ সোমবার বিকেলে থানায় মামলা করেছেন।

এ প্রসঙ্গে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. এরফান বলেন, লরির চালক প্রায় ৩০ ফুট লম্বা ওই লোহার অ্যাঙ্গেলটি দুর্ঘটনাস্থলে ফেলে দ্রুত বগুড়ার দিকে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়া লরিটির সন্ধান পেতে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তিনি জানান, দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৪০০ গজ দক্ষিণে বাসটিকে মহাসড়কের ওপর ফেলে রেখে চালক ও সহকারীরা পালিয়ে গেছেন।