মাতৃত্ব ভাতার তালিকায় সাংসদের হস্তক্ষেপ

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় মাতৃত্ব ভাতা পাওয়ার যোগ্য দরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা নারীদের তালিকা তৈরিতে স্থানীয় সাংসদ হস্তক্ষেপ করছেন। ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদস্যদের এ তালিকা তৈরির কথা। কিন্তু সাংসদ মহিলা লীগ ও যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীদের দিয়ে একটি তালিকা করিয়েছেন।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনের সাংসদ মো. আনোয়ারুল আবেদিন খান বলেন, মহিলা লীগ ও যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে হতদরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা নারীদের নাম সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতি ইউপিতে ৭৯ জনের মধ্যে তিনি ৩৫ জনের ছবি ও আলট্রাসনোগ্রাম প্রতিবেদনসহ নামের তালিকা করে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তামীম আল ইয়ামীনের কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বচ্ছতার জন্যই তিনি এ কাজ করেছেন। কারণ অতীতে ইউপিগুলোর বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে উপকারভোগীদের তালিকা প্রণয়নের অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সারা দেশে ‘দরিদ্র মায়েদের মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান কর্মসূচি’ চালু করেছে। এর আওতায় অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার তিন মাস থেকে একজন নারীকে পরবর্তী দুই বছর পর্যন্ত প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। তালিকা প্রণয়ন করতে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে গত মাসে ইউপিগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু কোনো ইউপি থেকেই তালিকা পাঠানো হয়নি।
গত মঙ্গলবার জানতে চাইলে উপজেলার মুশুলি ইউপির চেয়ারম্যান মো. ইফতেকার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, সংশ্লিষ্ট কার্যালয় থেকে নির্দেশনা আসার পর তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছিল। কিন্তু এখন তালিকায় আওয়ামী লীগের নেতাদের জন্য অর্ধেক নাম ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ইউপি সদস্যরা এই প্রস্তাবে রাজি নন।
আচারগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম মোফাজ্জল হোসেন বলেন, নয়টি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও তিনজন নারী ইউপি সদস্য এবং তিনি মিলে ৭৯ জন নারীর তালিকা প্রণয়ন করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর কাছেও আওয়ামী লীগের নেতাদের জন্য তালিকার অর্ধেক নাম ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে।
বেতাগৈর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল হোসেন সরকার বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আলোচনা ফলপ্রসূ হলে তালিকা পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রোমানা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলায় মোট ১২টি ইউপি রয়েছে। সব কটি ইউপি থেকে ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের নামের তালিকা তাঁর কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু কোনো ইউপি থেকে তালিকা পাঠানো হয়নি।