কুপিয়ে তিনজনকে হত্যা

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় গত রোববার পারিবারিক বিরোধের জের ধরে ছেলের ছুরিকাঘাতে সাহেদ আলী কবিরাজ (৬৫) নামের এক ব্যক্তি খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

একই দিন রাতে নড়াইলের লোহাগড়ায় দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে যুবলীগের নেতা জিয়াউল হাসান (৩৫) এবং ফরিদপুর সদরে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা আবুল বাসার (৬০) নামের এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা করেছে।

প্রথম আলোনিজস্ব প্রতিবেদক, আঞ্চলিক কার্যালয়প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

গলাচিপা (পটুয়াখালী): থানার পুলিশ ও পরিবার সূত্র জানায়, গলাচিপা উপজেলার পূর্ব চরবিশ্বাস গ্রামে রোববার বিকেলে সাহেদ আলী কবিরাজের সঙ্গে তাঁর ছেলে মো. মনির কবিরাজের (৩৫) ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে মনির ছুরি নিয়ে সাহেদ আলীকে ধাওয়া করেন। এ সময় সাহেদ আলী লাঠি দিয়ে মনিরের মাথায় আঘাত করেন। মনির ছুরি দিয়ে সাহেদ আলীর বুকে আঘাত করেন। গুরুতর অবস্থায় সাহেদ আলীকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চরকাজল খেয়াঘাটে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে আহত মনিরকে পুলিশ আটক করে।

গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক মোল্লা জানান, সাহেদ আলীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মনিরের ছোট ভাই আলমাস কবিরাজ বাদী হয়ে গতকাল হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মনির পুলিশি হেফাজতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

লোহাগড়া (নড়াইল): নিহত জিয়াউল হাসান লোহাগড়ার শিয়রবর গ্রামের মৃত আবুল হাসেম মোল্লার ছেলে। তিনি শালনগর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড (শিয়রবর) যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। জিয়াউলের চাচা ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এখলাচুর রহমান মোল্লা জানান, রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে শিয়রবর গুচ্ছগ্রাম এলাকা থেকে নিজের বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাত দুইটার দিকে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।

লোহাগড়া থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ফরিদপুর: রোববার সন্ধ্যা সাতটার দিকে শহরের মধ্য আলীপুর মহল্লার প্রামাণিক পাড়ায় বাড়িতে ঢুকে আবুল বাসারকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। নিহত আবুল বাসার সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের খোঁয়াড় গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি মসজিদে ইমামতির পাশাপাশি ঝাড়ফুঁক দিয়ে চিকিৎসা করতেন।

শহরের আলীপুরের ওই বাসায় আবুল বাসার প্রথম স্ত্রী শাহেদা বেগমকে (৫০) নিয়ে বসবাস করতেন। ঘটনার সময় ওই বাড়িতে আবুল বাসার ছাড়াও তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে জান্নাতুন নাঈম (১৪) ও মেয়ে মাফিজা বেগম (২৫) ছিলেন। জান্নাতুন নাঈম জানায়, চার-পাঁচজন মুখোশধারী লোক দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘরে ঢুকে বাড়ির অন্য সদস্যদের একটি কক্ষে আটকে রাখে। এরপর তারা আবুল বাসারকে অন্য কক্ষে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনির হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সম্পত্তিসংক্রান্ত ও পারিবারিক বিরোধের কারণে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই লোকমান ফকির বাদী হয়ে গতকাল দুপুরে অজ্ঞাতনামা পাঁচ ব্যক্তিকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত ব্যক্তির স্ত্রী শাহেদা বেগম ও মেয়ে রাফেজা বেগমকে (২২) আটক করা হয়েছে।

দুটি লাশ উদ্ধার: ফরিদপুর সদরপুর উপজেলার ঢেউখালি ইউনিয়নের বাবুরচর এলাকায় ভুবনেশ্বর নদের শাখা পেয়াজখালী-বাবুরচর খালে জোড়া ব্রিজসংলগ্ন এলাকা থেকে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বালিয়া গ্রামের কপোতাক্ষ নদসংলগ্ন টিআরএম খাল এলাকা থেকে গতকাল সোমবার সকাল নয়টার দিকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁর বয়স আনুমানিক ৪০ বছর।