'রামপাল নিয়ে ইউনেসকোর প্রতিবেদনে তথ্যগত ভুল আছে'

রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে ইউনেসকো যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে তথ্যগত ভুল আছে বলে দাবি করেছেন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কোম্পানি বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক উজ্জ্বল কান্তি ভট্টাচার্য।

আজ মঙ্গলবার খুলনা প্রেসক্লাবে বাগেরহাটের রামপালে নির্মিতব্য ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থারমাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বিষয়ে এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

উজ্জ্বল কান্তি বলেন, ‘ইউনেসকো বা বিশ্বব্যাংক যা বলবে, তা সব সময় ভালো কিছু হবে এমন নয়। তারা আমাদের সার্টিফিকেট দিতে আসেনি। তবে যেসব অভিযোগ তাদের কাছে করা হয়েছে, তার সত্যতা যাচাই করতে পারে।’

যারা উন্নত, তারা অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দমিয়ে রাখতে চায় উল্লেখ করে বিআইএফপিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘এটা আমাদের সমাজেও বিদ্যমান। উন্নত দেশগুলো অনুন্নত দেশগুলোকে দমিয়ে রাখতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে বাধার সৃষ্টি করে। উদাহরণ হিসেবে তিনি পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।’

ব্যবস্থাপনা পরিচালক দাবি করেন, তাঁরা মিথ্যার ওপর নয় সত্যের ওপর দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। ওই প্রকল্পের প্রভাব কোনোভাবেই পরিবেশের ওপর পড়বে না।

সম্প্রতি ইউনেসকো সুন্দরবনের পাশে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল চেয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে সুপারিশ করে। ওই সুপারিশে রামপাল এলাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে সুন্দরবনের অপূরণীয় ক্ষতি হবে উল্লেখ করে তা নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে অনুরোধ করা হয়।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওই বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরামর্শক (কনসালট্যান্ট) প্রকৌশলী খন্দকার আজিজুর রহমান বলেন, পরিবেশবাদীরা অনেক কিছু না জেনেই আন্দোলন করে যাচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে প্রকল্পটি নিয়ে একাধিকবার বৈঠক করা হয়েছে। সুন্দরবনের ক্ষতির ব্যাপারটি দেখার জন্য তাঁদের এখানে একাধিকবার আসার আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে, কিন্তু তাঁরা ভয়ে আসছেন না। কারণ, তাঁরা জানেন, সেখানে গেলে আর আন্দোলন করতে পারবেন না।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান। তিনি বলেন, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে ওই এলাকায় মানুষের কর্মসংস্থান হবে। মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাবে।

মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রকল্প রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়, ৯৩ শতাংশ। আর বাংলাদেশে রয়েছে ২ শতাংশের কম। প্রকল্প থেকে মোংলা বন্দর ও সুন্দরবনের নিকটতম দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার আর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের নিকটতম দূরত্ব ৬৫ কিলোমিটার। প্রকল্প হাতে নেওয়ার সময় পরিবেশগত সমীক্ষা যাচাই করা হয়েছে। প্রকল্পে ব্যবহৃত চিমনির উচ্চতা হবে প্রায় ৯০০ ফুট। আর বছরে মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বায়ুপ্রবাহ উত্তরমুখী এবং নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বায়ুপ্রবাহ দক্ষিণ-পূর্বমুখী হওয়ায় নির্গত ধোঁয়া সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি করবে না।
আরও পড়ুন: