নয়া মিয়া হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

বরগুনার আমতলী উপজেলার নয়া মিয়া ফরাজী হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড ও দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। বরগুনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মুহা. আবু তাহের আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ আদেশ দেন।

বরগুনা জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি ও এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আক্তারুজ্জামান বাহাদুর প্রথম আলোকে জানান, নির্যাতনের নির্মমতা, দুজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য এবং মারা যাওয়ার আগে নয়া মিয়ার জবানবন্দি বিবেচনায় নিয়ে বিচারক আসামিদের এ দণ্ড দেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামের শহিদুল ইসলাম, বারেক চৌকিদার, বশির মাতুব্বর, ও একই উপজেলার চিলা গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন চলাভাঙ্গা গ্রামের আবদুর রব চৌকিদার ও মো. মজিবর। রায়ে এঁদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন বছরের কারাদণ্ডেরও আদেশ দেন বিচারক। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, বরগুনার আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চলাভাঙ্গা গ্রামের গরু ব্যবসায়ী নয়া মিয়া ফরাজী ২০১২ সালের ১০ এপ্রিল সকালে গরু কেনার জন্য পটুয়াখালীর কলাপাড়া গরুর বাজারে যান। সন্ধ্যায় তিনি বাড়ি ফেরার সময় একই গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগীরা পূর্বশত্রুতার জের ধরে নয়া মিয়াকে পথে আটকে তাঁর (শহিদুল) বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতে নিয়ে একটি কক্ষে আটকে তাঁরা নয়া মিয়ার হাত-পা পাটা-পোঁতা দিয়ে থেঁতলে দেন এবং বুকে পদদলিত করে নির্যাতন চালান। এ সময় নয়া মিয়ার সঙ্গে থাকা ৭০ হাজার টাকাও তাঁরা (নির্যাতনকারীরা) ছিনিয়ে নেন।

রাতে খবর পেয়ে নয়া মিয়ার ছেলে নাসির উদ্দীন স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ও চৌকিদারকে নিয়ে শহিদুলের বাড়িতে যান এবং গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। ওই দিন ভোর চারটার দিকে নয়া মিয়া মারা যান।
এ ঘটনায় নয়া মিয়ার ছেলে নাসির উদ্দীন বাদী হয়ে ওই বছরের ১১ এপ্রিল আমতলী থানায় ছয়জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
আদালত সূত্র জানায়, মামলায় ১৯ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। এর মধ্যে দুজন সাক্ষী ছিলেন প্রত্যক্ষদর্শী।
আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বরগুনার জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তোফাজ্জল হোসেন তালুকদার ও কমল কান্তি দাস।
কমল কান্তি দাস রায়ের পর তাঁর প্রতিক্রিয়ায় প্রথম আলোকে বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।