স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে কনস্টেবলের নামে মামলা

স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার মানিকগঞ্জে মুরাদ হোসেন নামের এক কনস্টেবলের বিরুদ্ধে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছে নিহত গৃহবধূর পরিবার। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মামলাটি নথিভুক্ত করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হাছিনা রৌশন জাহান।
নিহত গৃহবধূ শামিম আরার ভাই মাসুদ রানা ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন। মামলায় মুরাদ, তাঁর বাবা আবদুল বাতেন, ভাই রাসেল হোসেন ও চাচা আবদুস সালামকে আসামি করা হয়েছে।
মুরাদ হোসেন মানিকগঞ্জ সদরের গিলন্ড পুলিশ ফাঁড়ির পিকআপের চালক। তাঁর বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার চাষাভাদ্রা গ্রামে। তাঁর স্ত্রী শামিম আরার বাড়ি দৌলতপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে দায়িত্ব পালন শেষে মুরাদ পুলিশের পিকআপ নিয়ে গিলন্ড এলাকায় ভাড়া বাসায় যান। এ সময় বাড়ির মূল ফটকের তালা খুলতে যান তাঁর স্ত্রী শামিম আরা। একপর্যায়ে পিকআপের ধাক্কায় বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ধসে শামিমার ওপর পড়লে তিনি গুরুতর আহত হন। এরপর তাঁকে স্থানীয় মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন মুরাদ। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
শামিম আরার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, যৌতুকের দাবিতে মুরাদ তাঁর স্ত্রীকে গাড়ির ধাক্কা দিয়ে হত্যা করেছেন। এ নিয়ে গত শনিবার প্রথম আলোয় ‘গাড়ির ধাক্কায় স্ত্রীকে হত্যা কনস্টেবলের?’ শিরোনামে সংবাদ ছাপা হয়।
আরজিতে বাদী উল্লেখ করেন, প্রায় ২৪ বছর আগে মুরাদ ও শামিমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুক হিসেবে কনস্টেবল মুরাদকে টাকাপয়সা দেওয়া হয়। এর আগে মুরাদ আরেকটি বিয়ে করেছেন। আগের স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার জন্য শামিমার বাবার কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা নেন মুরাদ। এরপর থেকে মাঝেমধ্যে মুরাদ টাকার জন্য শামিমাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতেন। এসব কাজে অন্য আসামিরা তাঁকে সহায়তা করতেন। প্রায় এক বছর আগে যৌতুকের টাকার জন্য শামিমাকে মারধর করে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন মুরাদ। পরে জমি বন্ধক রেখে রূপালী ব্যাংকের দৌলতপুর শাখা থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে মুরাদকে দেওয়া হয়। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ করে আবারও মুরাদকে দেওয়া হয়। বিষয়টি মুরাদের বাবা, ভাই ও চাচাকে জানালে তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নেননি।
মুরাদ হোসেন গতকাল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।
গতকাল বিকেলে ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি এ কে এম নূরুল হুদা রুবেল বলেন, আরজি আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনালের বিচারক সদর থানাকে মামলাটি নথিভুক্ত করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।