কৃষ্ণচূড়ার পর মল চত্বরে উপড়ে পড়ল আকাশমণি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনলাগোয়া গাছের সারির একটি আকাশমণিগাছ উপড়ে পড়েছেছবি: আসিফ হাওলাদার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পর গত মঙ্গলবার থেকে জনশূন্য হয়ে পড়েছে। এই ক্যাম্পাসে মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে উপড়ে পড়ল আরও একটি গাছ। গতকাল শনিবার রাতে চত্বরের রেজিস্ট্রার ভবনলাগোয়া গাছের সারির একটি আকাশমণিগাছ উপড়ে পড়েছে। এর আগে গত বুধবার দুপুরে এর ঠিক পরের সারির একটি কৃষ্ণচূড়াগাছ উপড়ে পড়ে যায়। শুক্রবার তা কেটে অপসারণ করা হয়।

গতকাল রাতে উপড়ে পড়ার পর আজ রোববার আকাশমণি গাছটি কেটে অপসারণের প্রক্রিয়া চলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরের গাছগুলোর বেশির ভাগের বয়স ৫০ থেকে ৬০ বছর। বয়সের ভারে দুর্বল হয়ে পড়াসহ নানামুখী কারণে গাছগুলো উপড়ে পড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ঝুঁকিপূর্ণ গাছের জায়গায় নতুন গাছ রোপণের কথা ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

আজ রোববার দুপুরে মল চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন শ্রমিক মল চত্বরে উপড়ে পড়া গাছটির কাণ্ড ও ডালপালা কাটছেন। তাঁরা জানান, এই আকাশমণিগাছ গতকাল রাত ১০টার কিছু পর হঠাৎ উপড়ে পড়ে যায়। গাছটি উচ্চতায় আশপাশের গাছগুলোর মধ্যে সবচেয়ে লম্বা ছিল। এটি উপড়ে পড়ায় রেজিস্ট্রার ভবনের সামনের ওই জায়গা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।

মল চত্বরের গাছগুলোর বয়স ৫০ থেকে ৬০ বছর বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গাছপালার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা আরবরিকালচার সেন্টারের পরিচালক মিহির লাল সাহা। একের পর এক গাছ উপড়ে পড়ার পেছনে তিনি তিনটি কারণ দেখছেন। এগুলো হচ্ছে মাটির গঠনপ্রকৃতি, গাছের দীর্ঘ বয়স ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়া।

উপড়ে পড়া আকাশমণি গাছটি
ছবি: আসিফ হাওলাদার

উদ্ভিদবিজ্ঞানের অধ্যাপক মিহির লাল সাহার ভাষ্য, মল চত্বরের গাছগুলোর বেশ বয়স হয়েছে। ফলে গাছের মূলব্যবস্থা (শিকড়) দুর্বল হয়ে পড়েছে। একটু বৃষ্টি হলে ঢাকা শহরের মাটি গাছকে সাপোর্ট (ঠেস দেওয়া) দিতে পারে না। এ ছাড়া কিছু কিছু জীবাণু গাছের মূলব্যবস্থার ক্ষতিসাধন করেছে। এ ছাড়া গাছগুলোর রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও কমেছে। একটা বয়সের পর মানুষের যেমন রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়, গাছের ক্ষেত্রেও তা-ই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল হয়ে গেলে গাছের শিকড়ে রোগ উৎপাদনকারী জীবাণু সেখানে সহজেই আক্রমণ করতে পারে।

ঝুঁকিপূর্ণ গাছ অপসারণ ও নতুন গাছ রোপণের বিষয়টি মাথায় রয়েছে বলে জানান মিহির লাল সাহা। তিনি বলেন, আসন্ন গাছ লাগানোর মৌসুমে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো চিহ্নিত করে তার আশপাশে চারা রোপণ করা হবে। চারা একটু বড় হলে ঝুঁকিপূর্ণ গাছ অপসারণ করা হবে।

আরও পড়ুন