খাবার বিক্রির অভিযোগে নারীকে আদালতে পাঠাল পুলিশ

আদালত
প্রতীকী ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রসংলগ্ন (টিএসসি) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকে খাবার বিক্রির ‘অভিযোগে’ রানু বেগম নামের এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আটকের পর আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত তাঁকে শাহবাগ থানায় আটক রাখা হয়। পরে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকে চা-রুটির পাশাপাশি নানা ধরনের খাবারের দোকান বসত। সকাল–দুপুর ও রাতে এসব দোকানে খেতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীসহ এই এলাকায় আসা দর্শনার্থীদের অনেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তে গত ৬ অক্টোবর দোকানগুলো উচ্ছেদ করা হয়৷

পুলিশ বলছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকে কোনো ভাসমান দোকান থাকবে না—এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সেখানকার সব দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছিল। সেই জায়গায় আবার দোকান করতে আসায় গতকাল রানু বেগমকে আটক করা হয়। যদিও গতকাল সন্ধ্যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ওই ফটকে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অন্য একজন নারী খাবার বিক্রি করছেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশীদের নির্দেশে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রানু বেগমকে আটক করা হয় বলে জানা গেছে। রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে শাহবাগ থানায় আটক থাকা রানু বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোববার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে আমি পার্সেল করে খাবার নিয়ে আসি। তখন কয়েকজন পুলিশ এসে আমাকে বলেন যে এখানে খাবার বিক্রি করা নিষেধ হওয়া সত্ত্বেও খাবার এনে আমি অপরাধ করেছি, তাই আমাকে থানায় যেতে হবে। আমি বলি যে ভুল হয়ে গেছে, আমি চলে যাচ্ছি, আর আসব না। কোনো কথাই না শুনে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁরা আমাকে থানায় নিয়ে আসেন।’ তিনি জানান, খাবারের দোকানটির ওপর তাঁর পরিবার নির্ভরশীল৷

আজ দুপুর ১২টার দিকে রানু বেগমকে শাহবাগ থানা থেকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ফুটপাত দখল করে দোকান করার অভিযোগে তাঁর (রানু বেগম) বিরুদ্ধে নরমাল প্রসিকিউশন হয়েছে। এটিও একধরনের মামলা। উচ্ছেদ করা জায়গায় আর দোকান করবেন না, এই মর্মে ২০০ টাকা মুচলেকা দিয়ে হয়তো তিনি আজই ছাড়া পাবেন৷

ডিএমপির রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকে কোনো অবৈধ ভাসমান দোকান থাকবে না—এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সেখানকার সব দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে তিনি যখন সেই জায়গায় আবার দোকান করেছেন, তখন তাঁকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অননুমোদিত জায়গায় দোকান করার জন্য ওই ব্যক্তির (রানু বেগম) বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷

সন্ধ্যায় অন্যদেরও খাবার বিক্রি করতে দেখা গেছে—এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি দাবি করে বলেন, ‘আইন সবার ক্ষেত্রেই সমান আছে। যেহেতু আমি আইন প্রয়োগ করি, আইনটা ভালো বুঝি।’