গৃহকর্মী খাদিজাকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার সুপারিশ

প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মিরপুরে শিশু গৃহকর্মী খাদিজা নির্যাতনের ঘটনাকে যারা ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করেছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। একইসঙ্গে ভুক্তভোগী খাদিজাকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ারও সুপারিশ করা হয়েছে।

গৃহকর্মী খাদিজা নির্যাতনের ঘটনায় আজ সোমবার মানবাধিকার কমিশনের ফুলবেঞ্চে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারহানা সাঈদ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, নির্যাতিত গৃহকর্মী খাদিজা কমিশনে হাজির হয়ে বক্তব্য দেন। কীভাবে নির্যাতনের শিকার হয়, সেই বণনা তুলে ধরে শিশু খাদিজা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবকে ভান্ডারিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা সাময়িক সাহায্য মঞ্জুর করার ব্যবস্থা নেবেন। তিন মাসের মধ্যে সুপারিশ বাস্তবায়ন করে তা কমিশনকে জানাতে বলা হয়।
২০১৩ সালে শিশু খাদিজা নির্যাতনের শিকার হয়।

খাদিজার ওপর নির্যাতনের পর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি জানিয়ে যথাযথ প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছিল চিলড্রেন চ্যারিটি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (সিসিবি)। কোনো প্রতিকার না পেয়ে ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর সংগঠনটির পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের ৩১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে চলতি বছরের জুনে। রায় পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে খাদিজার ওপর নির্যাতনের বিষয়ে শুনানি করে প্রতিকার দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
হাইকোর্টের রায়ের পর এ পর্যন্ত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অনলাইনে দুটি শুনানি করে। গত ২৭ আগস্ট শুনানিতে খাদিজা বলেছেন, তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন এবং ঘটনার বিচার চান। পরে চলতি মাসের ৩ তারিখ মানবাধিকার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান।

শিশু গৃহকর্মী খাদিজা নির্যাতনের ঘটনাটি আলোচনায় এসেছিল ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার–এ প্রকাশিত একটি সংবাদের সূত্র ধরে। ২০১৩ সালের ১০ ডিসেম্বর প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম ছিল, ‘ডোমেস্টিক হেল্প টর্চার্ড’ । ডেইলি স্টার–এর প্রতিবেদনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বক্তব্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল, গরম ইস্তিরি দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়াসহ খাদিজার শরীরে বিভিন্ন নির্যাতনের চিহ্ন ছিল । শিশু খাদিজাও তখন জানিয়েছিল, তাকে প্রায়ই মারধর করা হতো। মিরপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। প্রতিবেদনটি দেখে সিসিবি খাদিজার মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিকার চেয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে আনে।

২০১৩ সালে পুলিশ যখন খাদিজাকে গৃহকর্তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে, তখন বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়ি ঘিরে রেখেছিল। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ১৮ দিন। তবে তখন পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, খাদিজাকে কেউ মারধর করেনি।