ফাইল ছবি

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। শাহিন হাওলাদারের করা এক রিটের শুনানি নিয়ে আজ রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

আদালত বলেছেন, আবেদনকারীর বিষয়ে (শাহিন) অভিযোগ অনুসন্ধান বা তদন্তের কাজ চলতে বাধা থাকবে না।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে সালিসের সুযোগ নিয়ে এক কিশোরীকে (১৪ বছর ২ মাস ১৪ দিন) বিয়ে করায় গত ২৯ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে শাহিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এর বৈধতা নিয়ে শাহিন হাওলাদার হাইকোর্টে ভার্চ্যুয়াল রিট দাখিল করেন। এর শুনানি নিয়ে ৭ জুলাই বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ ৩০ দিন বা নিয়মিত আদালত খোলা পর্যন্ত যেটি আগে হয়, সে সময় পর্যন্ত সাময়িক বরখাস্তের আদেশে স্থগিতাদেশ দেন। এ অবস্থায় নিয়মিত রিট দায়ের করেন শাহিন হাওলাদার, যা আজ শুনানির জন্য ওঠে।

আদালতে শাহিন হাওলাদারের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী বিবেক চন্দ্র। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

পরে আইনজীবী বিবেক চন্দ্র প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাইকোর্টের একক ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ প্রথমে ৩০ দিন বা নিয়মিত আদালত খোলা পর্যন্ত শাহিন হাওলাদারের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে আদেশ দেন। এর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নিয়মিত রিট দায়ের করা হয়। হাইকোর্ট রুল দিয়ে শাহিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। ফলে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব যথারীতি চালিয়ে যেতে পারবেন। সাময়িক ওই বরখাস্তের আদেশ কেন বেআইনি হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। শাহিন হাওলাদারের ক্ষেত্রে অনুসন্ধান ও তদন্ত চলতে বাধা থাকবে না বলেছেন আদালত।’

২৫ জুন ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন ৬০ বছর বয়সী বিবাহিত চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। জানা গেছে, প্রেমের টানে বাড়িছাড়া দুই কিশোর-কিশোরীর বিষয়ে ডাকা সালিসে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার নিজেই ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন। বিয়ের এক দিন পর ওই কিশোরী শাহিন হাওলাদারকে তালাক দেয়।

ইতিপূর্বে ভার্চ্যুয়াল আদালতে দাখিল করা রিটের ভাষ্য, সাময়িক বরখাস্তের দিনই (২৯ জুন) শাহিন হাওলাদারকে কেন চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না, তার কারণ দর্শাতে বলা হয়। এ জন্য ১০ দিন সময় দেওয়া হয়। কারণ, দর্শানোর জবাব দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার আগেই ওই দিন তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়, যা আইন সমর্থন করে না। মেয়েটির বয়স ১৪ বছর বলা হয়েছে। অথচ ২০১১ সালের একটি জন্মসনদ অনুযায়ী মেয়েটির বয়স ১৮ বছর ৩ মাস।