জেলা–উপজেলায় জলমহাল ইজারার আবেদন অনলাইনে

সরকারি জলমহাল ইজারাসংক্রান্ত কমিটির ৬৭তম সভায় সভাপতিত্ব করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
ছবি: ভূমি মন্ত্রণালয়

জেলা-উপজেলায় অনলাইনে জলমহাল ইজারার আবেদন দাখিলের প্রক্রিয়া চালুর নির্দেশ দিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেছেন, এতে জলমহাল ইজারার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিসহ সবাই উপকৃত হবে।

সরকারি জলমহাল ইজারাসংক্রান্ত কমিটির ৬৭তম সভায় সভাপতিত্ব করার সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ নির্দেশ দেন ভূমিমন্ত্রী। আজ বুধবার সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ সভা হয়। এ সময় ভূমিসচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

গত বছরের ১৫ নভেম্বর জারি করা এক পরিপত্রের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয় অনলাইনে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে জলমহাল ইজারার আবেদন দাখিলের সুবিধা চালু করে। এখন land.gov.bd ভূমিসেবা কাঠামো থেকে অথবা সরাসরি jm.lams.gov.bd ওয়েবপোর্টালে গিয়ে জলমহাল ইজারার জন্য আবেদন দাখিল করা যাচ্ছে। এ ছাড়া জলমহাল ইজারার আবেদন অনলাইনে দাখিল এবং ইজারা প্রক্রিয়ার বিস্তারিত উপর্যুক্ত ওয়েবপোর্টাল থেকেই জানা যাচ্ছে। সাধারণত ২০ একরের ঊর্ধ্বে সরকারি জলমহাল ইজারার অনুমোদন মন্ত্রণালয় পর্যায়ে দেওয়া হয়ে থাকে।

আজকের সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. আব্বাছ উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব (সায়রাত) মুহাম্মদ সালেহউদ্দীনসহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ ছাড়া ইজারার জন্য প্রস্তাবিত জলমহাল সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসকেরা এবং তাঁদের প্রতিনিধি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নিজ নিজ জেলা থেকে সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজকের সভায় উপস্থাপিত ইজারা আবেদনের শতভাগই অনলাইনের মাধ্যমে দাখিল করা হয়েছে। অনলাইনে জলমহাল ইজারার আবেদন দাখিল করার কারণে মৎস্যজীবী সমিতির সদস্যরা ইজারা প্রক্রিয়ার নানা জটিলতা এড়াতে পেরেছেন। এ ছাড়া এ সম্পর্কিত যাতায়াত কমে যাওয়ায় সমিতির সদস্য মৎস্যজীবীদের অনেক অর্থ সাশ্রয় হয়েছে।

আজ ১৪২৯-১৪৩৪ বঙ্গাব্দ মেয়াদে উন্নয়ন প্রকল্পে জলমহাল ইজারার জন্য বিভিন্ন জেলার ৪৬৮টি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড অনলাইনে আবেদন দাখিল করে। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রাজশাহী, পাবনা, নাটোর, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রংপুর, গাইবান্ধা, রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ এবং কিশোরগঞ্জ জেলার মোট ৫৫টি প্রস্তাব ও বিবিধ ৩টি প্রস্তাব সরকারি জলমহাল ইজারা প্রদানসংক্রান্ত কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হয়। যাচাই-বাছাই করে জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদন ও অন্যান্য সার্বিক দিক বিবেচনা করে সরকারি জলমহাল ইজারাসংক্রান্ত কমিটি ইজারার অনুমোদন দেয়।

বিল, হাওর, বাঁওড়, নিম্ন জলাভূমি ও নদ-নদীতে মৎস্য আহরণের এলাকাকে জলমহাল বলা হয়। এক হিসাবমতে, ছোট-বড় মিলিয়ে দেশের জলমহালের সংখ্যা প্রায় ৩৮ হাজার। এসব ইজারা দিয়ে বছরে প্রায় শতকোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়।