জোনায়েদ সাকিসহ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

জোনায়েদ সাকিসহ গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ৷ ৭ জুন, ঢাবি ক্যাম্পাস
ছবি: প্রথম আলো৷

চট্টগ্রামে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিসহ গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র ফেডারেশন ও ছাত্র অধিকার পরিষদ। হামলার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের দায়ী করে ছাত্রনেতারা সরকারের উদ্দেশে বলেন, হামলা করে ভয় দেখিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীদের দমিয়ে রাখা যাবে না।

মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়। ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে একদল লোক এ হামলা চালান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের নেতা রাশেদ খানসহ সাতজন আহত হন। জোনায়েদ সাকির নাক দিয়ে রক্ত ঝরেছে। তিনি বাঁ হাতে আঘাত পেয়েছেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে থেকে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন গণসংহতি আন্দোলনের ছাত্রসংগঠন ছাত্র ফেডারেশন ও গণ অধিকার পরিষদের ছাত্রসংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা। মিছিলে ‘জোনায়েদ সাকি আহত কেন, শেখ হাসিনা জবাব চাই’, ‘ছাত্রলীগের আস্তানা ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘গুণ্ডালীগের আস্তানা ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ প্রভৃতি বলে স্লোগান দেওয়া হয়। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে মিছিলটি টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

সমাবেশে ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণে আহত ব্যক্তিদের দেখে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা যখন চলে আসছিলেন, তখন ছাত্রলীগের স্থানীয় সন্ত্রাসীরা প্রশাসনের উপস্থিতিতেই অতর্কিতভাবে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করেছে। এতে অনেক নেতা-কর্মী রক্তাক্ত হয়েছেন। বর্তমান সরকার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে একটি জুলুমের শাসন কায়েম করেছে। এই জুলুমের বিরুদ্ধে যাঁরাই প্রতিবাদী কণ্ঠ নিয়ে হাজির হচ্ছেন, তাঁদের ওপরই তাঁরা হামলে পড়ছেন, মামলা দিচ্ছেন, সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিচ্ছেন। চট্টগ্রামে জোনায়েদ সাকির ওপর হামলা মুক্তিকামী মানুষের কণ্ঠকে চাপিয়ে রাখার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। হামলা করে ও ভয় দেখিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।

ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় অর্ধশতাধিক মানুষ মারা গেছেন, চার শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। সেখানে যে হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেই কষ্ট আমরা অনুভব করতে পারছি। হতাহত ব্যক্তিদের দেখতে জোনায়েদ সাকিসহ গণতন্ত্র মঞ্চের সাত সংগঠনের নেতারা মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখানে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা জোনায়েদ সাকিসহ গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। হামলায় অন্তত সাত-আটজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনার জন্য আমরা সরকারি দলের প্রতি ধিক্কার জানাই।

আরও পড়ুন

গণতন্ত্র ও উন্নয়নের কথা বলে বর্তমান সরকার সারা দেশের মানুষকে নির্যাতন ও নিষ্পেষণ করছে বলে অভিযোগ করেন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত নেতা-কর্মীদের দেখতে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীরা চট্টগ্রাম মেডিকেলে গিয়েছিলেন।

সেখানে জননেতা জোনায়েদ সাকি ও রাশেদ খানসহ ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্র ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন। সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণে যে মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে, এর জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ। তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে মানুষের জীবনের তোয়াক্কা না করে বিএম ডিপোর মালিক মুজিবুর রহমানের মতো ব্যক্তিরা অবৈধভাবে শত শত কোটি টাকা কামাচ্ছেন। গণতন্ত্র ও মুক্তিকামী নেতারা এসবের প্রতিবাদ জানিয়ে যখন দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের অধিকারের কথা বলার চেষ্টা করছেন, তখন তাঁদের ওপর হামলা-মামলা-নির্যাতন করা হচ্ছে।