নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুডস কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহতদের একজনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁর নাম মোরসালিন মিয়া (২২)। তাঁর গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের চিরির বন্দর উপজেলায়। থাকতেন রূপগঞ্জ উপজেলার গাউছিয়ায়।
অগ্নিকাণ্ডের সময় মোরসালিন ভবনের তিনতলা থেকে লাফিয়ে নিচে পড়েছিলেন। সেদিন রাতেই ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
আজ শনিবার বেলা তিনটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে মোরসালিনের লাশ তাঁর মামা জুয়েল হকের কাছে তুলে দেওয়া হয়। তাঁর মামাও ওই কারখানায় কাজ করেন।
স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি রূপগঞ্জের পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ইফতেখার উদ্দিন।
জুয়েল হক জানান, কারখানার তিনতলায় সেজান জুস সেকশনে কাজ করতেন মোরসালিন। তাঁর বেতন ছিল সাত হাজার টাকা। দুই ভাই–বোনের মধ্যে মোরসালিন বড়। তাঁর বাবার নাম আনিসুল হক।
জুয়েল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোরসালিনদের অভাব–অনটনের সংসার। পরিবারের কথা ভেবে মোরসালিন এসএসসি পরীক্ষার পর আর পড়ালেখা করেনি। চার বছর আগে সে কাজে যোগ দেয় এই কারখানায়। আমরা এর ক্ষতিপূরণ ও বিচার চাই।’
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে হাশেম ফুডস লিমিটেডের কারখানায় আগুন লাগে। এ সময় লাফিয়ে পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। আহত হন অর্ধশত শ্রমিক। ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ১৮টি ইউনিট ২০ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে গতকাল শুক্রবার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ওই ভবনের চারতলা থেকে ২৬ নারীসহ ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। সব মিলিয়ে এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫২ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) সূত্র জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জের আগুনের ওই ঘটনায় ৫০ জনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে একজনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে ২৬ জনের মরদেহ, জরুরি বিভাগের মর্গে আছে আটজনের মরদেহ এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে ১৫ জনের মরদেহ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মো. নূরুন্নবী প্রথম আলোকে বলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া মোরসালিনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ঘটনাস্থল থেকে আরও দুজনের লাশ হস্তান্তর করা হয়। এখন পর্যন্ত এই তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।