এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রকল্পের মুখ্য স্থপতি মনজুর কাদের প্রথম আলোকে বলেন, মহাপরিকল্পনাটি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। এ সময়ে এ ধরনের একটি ফটক নির্মাণের কোনো যৌক্তিকতা নেই। প্রকল্পের কাজ শুরু হলে এ ফটক ভাঙতে হবে। তিনি বলেন, অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজে হাত দেওয়ার আগে কলেজ কর্তৃপক্ষ পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠানকে জানালেও এ ফটক নির্মাণের বিষয়টি জানায়নি।
মনজুর কাদের বলেন, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সময় লাগবে, এটা ঠিক। তাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মতো একটি প্রতিষ্ঠানে রোগীদের স্বার্থেই উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ রাখা যাবে না। সে ধরনের কাজ চলছেও। তবে ফটক নির্মাণের বিষয়টি অপ্রত্যাশিত। তিনি বলেন, হাসপাতালে ডেঙ্গু ইউনিট, শিশুদের জন্য বিশেষ ইউনিট, অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানো কিংবা গ্যারেজ বানানোর মতো ফটক নির্মাণের বিষয়টি তেমন জরুরি নয়। তাই একে অর্থের অপচয়ও বলা যায়।
তবে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. টিটো মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের হোস্টেল আছে। ফটকের সঙ্গে যুক্ত দেয়াল দুর্বল হয়ে গেছে। তাই ছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এসেছে। হোস্টেলের আশপাশে কিছু উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল থেকে কলেজকে আলাদা করার জন্যও একটি ভালো ফটক দরকার। আগামী পাঁচ-ছয় বছর চালানোর মতো করে ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দের মধ্যেই কাজগুলো করা হচ্ছে।
তবে মহাপরিকল্পনার পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ফটক নির্মাণ নিয়ে কথা হয়নি বলে স্বীকার করেছেন কলেজ অধ্যক্ষ। একাধিক চিকিৎসকও এ মুহূর্তে ফটক নির্মাণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চিকিৎসক প্রথম আলোকে বলেন, ১৯৪৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত আগের ফটক দিয়েই চলেছে; এখন আর চলছে না কেন বা তড়িঘড়ি করে কেন গেট বানাতে হচ্ছে, তা বোঝা যাচ্ছে না।
অবশ্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী একেকটা ভবন ভেঙে নতুন করে আবার সব ভবনের কাজ শেষ করা সহজ বিষয় নয়। কত বছর লাগবে কাজ শেষ করতে তা–ও জানা নেই। ঢাকা মেডিকেল কলেজের মতো স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠানে একটি ভালো ফটক নেই। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আবেগও জড়িত। তাই বিষয়টি একটু নমনীয়ভাবে দেখা যায়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক কলেজের ফটক নির্মাণ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে হাসপাতালের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে রোগীদের স্বার্থে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) সিট বাড়ানো, আধুনিক কেবিন চালু করা, নারী ও শিশুদের জন্য বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের বিভিন্ন তথ্য দিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব উন্নয়নের পেছনে যে খরচ হচ্ছে, তার প্রতিদান পেতে খুব বেশি সময় লাগবে না।