তাজউদ্দীন আহমদ স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের স্মারক বক্তৃতা গত বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি ‘তাজউদ্দীন আহমদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ড লেকচার ২০২০’ নামে স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করে। মূল আলোচক ছিলেন কোস্টারিকার ইউনিভার্সিটি ফর পিস-এর ইমেরিটাস প্রফেসর ড. আমর আবদাল্লা।
‘দ্য লেগাসি অব তাজউদ্দীন আহমদ: পিস অ্যান্ড কনফ্লিট স্টাডিজ পারস্পেকটিভস’ শিরোনামে অনুষ্ঠানে এ-সংক্রান্ত ট্রাস্টের চেয়ারপারসন অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ, কনভেনর অধ্যাপক মো. আবদুল করিম, এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মাহফুজা খানম এবং বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের জ্যেষ্ঠ কন্যা ট্রাস্ট ফান্ডের প্রতিষ্ঠাতা শারমিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া উত্তর আমেরিকা ও বাংলাদেশ থেকে অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) দিদার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসাবিদ ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, প্রকৌশলী জে বি বড়ুয়া, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. যুলফিকার হোসেন, গবেষক ড. সিন্থিয়া ফরিদ, অধ্যাপক ড. জেবুন্নেসা, ড. কওসার পারভীন চৌধুরী, অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান, ড. আবদুস সাত্তার মোল্লা, জে গেইন্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিন আনোয়ার প্রমুখ।
অধ্যাপক আবদুল করিম তাঁর উপস্থাপনায় তাজউদ্দীন আহমদের সংক্ষিপ্ত জীবনী (Biography - Tajuddin Ahmad (tajuddinahmadbd.com) ও আলোচক আমর আবদাল্লার পরিচিতি (Amr Bio-In Peace, Amr (inpeaceamr.com) তুলে ধরেন।
আমর আবদাল্লা তাঁরই সৃষ্ট শান্তি ও সংঘর্ষ শিক্ষার সি আর সিপ্পাবিও (C. R. SIPPABIO) মডেলের আলোকে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে তাজউদ্দীন আহমদের দূরদর্শী নেতৃত্ব ও সাফল্যকে ২৫ মার্চ ১৯৭১—১৫ মার্চ ১৯৭২ সময়সীমার মধ্যে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করেন।
ড. আমর আবদাল্লা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত সরকারের প্রধান লক্ষ্য ছিল স্বাধীনতা। সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যেসব বিষয়ে এ সরকার সফল হয় তা হলো, ভারত ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের মাধ্যমে ক্ষমতার ভারসাম্যকরণ, যার ফলে গণহত্যাকারী পাকিস্তান বাহিনী ও তার সহায়কেরা পরাজিত হয়; কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে আগ্রাসনে সহায়তাকারী বিশ্বশক্তি যুক্তরাষ্ট্রকে নাজেহাল; মিডিয়া ও কৌশলগত জনসংযোগের মাধ্যমে আগ্রাসন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে চাপ, বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বে জনমত ও সমবেদনার সৃষ্টি। তিনি বলেন,এ অভূতপূর্ব সফলতার ফলাফল রূপে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। এর ফলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তিলাভ ও স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। ভারতীয় বাহিনীর বাংলাদেশ ত্যাগ করে চলে যায়।
পাওয়ার পয়েন্টে অধ্যাপক আমরের সাবলীল ভাষ্যে আরও উঠে আসে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানের বৈষম্য উপাদানসমূহ এবং এর ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও সাংঘর্ষিক অবস্থান। বক্তব্য শেষে আমর আবদাল্লা শ্রোতা ও দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ তাঁর সমাপনী বক্তব্যে মূল আলোচনার ঐতিহাসিক প্রেক্ষিত নিয়ে কথা বলেন। শারমিন আহমদ আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ ধরনের আলোচনা নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে অনুপ্রাণিত করবে। বিজ্ঞপ্তি