তিন ট্রেন দেরিতে, বেশির ভাগ ছেড়েছে সময়মতো
রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে সিলেটগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস। বেলা সোয়া ১১টায় স্টেশন থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ট্রেনটির। ঈদ করতে সস্ত্রীক এই ট্রেনে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন সাকিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দুই বছর পর বাড়িতে ঈদ করতে যাচ্ছি। সকাল থেকে দেখলাম বেশির ভাগ ট্রেনই সময়মতো স্টেশন ছেড়ে যাচ্ছে।’
সাকিবুর রহমানের সঙ্গে কথা হতে হতেই জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি স্টেশন ত্যাগ করে। নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট পর ট্রেনটি স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়।
কমলাপুর থেকে ঈদের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে গত বুধবার। সে হিসাবে আজ রোববার ঈদযাত্রার পঞ্চম দিন। আজ ভোর থেকে স্টেশনে যাত্রীর চাপ গত তিন দিনের তুলনায় কিছুটা বেশি ছিল। একটু বেলা হতেই স্টেশনে যাত্রীর আনাগোনা বাড়ে। সকাল থেকে বেশির ভাগ ট্রেন সময়মতো স্টেশন থেকে ছেড়েছে। তবে কয়েকটি ট্রেন ২০ থেকে ৩০ মিনিট দেরিতে ছাড়ে। আর তিনটি ট্রেন এক ঘণ্টা দেরিতে স্টেশন ত্যাগ করে।
কমলাপুর রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভোর থেকে বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত আন্তনগর, লোকাল মেইলসহ ২০টি ট্রেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে গেছে। আজ মেইল, আন্তনগর ও কমিউটার মিলিয়ে ১২২টি ট্রেন কমলাপুর রেলস্টেশন যাতায়াত করবে। এসব ট্রেনে ৫৩ হাজার যাত্রী ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা দেবেন।
অনেকে যানজটের কথা চিন্তা করে একটু আগেভাগেই কমলাপুর রেলস্টেশনে চলে আসছেন। তেমনই একজন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কাজী ইব্রাহিম খলিল। তিনি স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ঈদ করতে চট্টগ্রামের বাড়িতে যাবেন। তিনি চট্রলা এক্সপ্রেসের যাত্রী। ট্রেনটির স্টেশন ছাড়ার নির্ধারিত সময় বেলা একটায়। ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘আমাদের বাসা মোহাম্মদপুর। রাস্তায় যানজট নেই তেমন একটা। তবু ভাবলাম, একটু আগেভাগেই স্টেশনে চলে আসি।’
কমলাপুর রেলস্টেশন সূত্রে জানা গেছে, চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ট্রেনটি ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট দেরি করে ৮টায় কমলাপুর স্টেশন ত্যাগ করে। রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস সকাল ৬টায় স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা। এটি এক ঘণ্টা দেরি করে ছেড়ে যায়। খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা। সেটি ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট দেরি করে সাড়ে নয়টার দিকে স্টেশন ত্যাগ করে।
অবশ্য কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ারের দাবি, ট্রেন তিনটি ছাড়তে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট দেরি করেছে।
মাসুদ সারওয়ার বলেন, ‘এটি ছিল অপারেশনাল ডিলে। এটাকে শিডিউল বিপর্যয় বলা চলে না। আমাদের সবকিছু ঠিকই ছিল। তবে সামাল দিতে একটু কষ্ট হয়ে যায়। এত মানুষ একসঙ্গে স্টেশনে এসেছে, আমরা তাদের ঠেকাতে পারছি না। আমরা সময়ের চেয়ে নিরাপত্তাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। অপারেশনাল খুবই ভালোভাবে চলছে। কয়েকটি ট্রেন ছাড়তে ২০ থেকে ৩০ মিনিট দেরি হয়েছে।’
ফিরতি টিকিট ও কাল সোমবারের টিকিট প্রসঙ্গে স্টেশন ব্যবস্থাপক জানান, আজ ৫ মের টিকিট বিক্রি চলছে সারা দেশ থেকে। অনলাইন ও কাউন্টারে—দুভাবেই টিকিট বিক্রি চলছে। ২ ও ৪ মে তারিখের টিকিট চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। ঈদ কবে হবে, সেটি নির্ধারিত হওয়ামাত্রই এই দিনের টিকিট একযোগে অনলাইন ও কাউন্টারে পাওয়া যাবে।