দুবাই বিমানবন্দরে ৭৪ ঘণ্টা, এরপর ফিরতে হলো ১০৪ প্রবাসীকে

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
ফাইল ছবি

সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) প্রবাসী ফেনীর আলী হোসেন কাজে ফিরতে ফ্লাই দুবাই উড়োজাহাজ কোম্পানির টিকিট কেনেন বেশি দামে। ফেনীর ‘বিনিময় ট্রাভেলস’ থেকে তাঁর টিকিটের দাম রাখা হয় ৯৫ হাজার টাকা। এর বাইরে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতিপত্রের নামে আরও দুই হাজার টাকা নেয় ‘বিনিময়’। ৮ অক্টোবর ফ্লাইট থাকলেও একদিন দেরি করে ৯ অক্টোবর ঢাকা ছাড়ে। দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছার পর অনুমতিপত্র না থাকায় পুলিশ আটক করে তাঁকে। দুদিন পর দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। এই প্রবাসীরা ৭৪ ঘণ্টা দুবাই বিমানবন্দরে অবস্থান করেন, এ সময় তাদের খাবারও দেওয়া হয়নি।

আলী হোসেনের মতো ১০৪ জন প্রবাসী রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় দেশে ফিরে এসেছেন। তারা সবাই ফ্লাই দুবাইয়ের টিকিট কিনে প্রতারিত হয়েছেন। আলী হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক গুণ বেশি দাম দিয়ে ফ্লাই দুবাইয়ের টিকিট নিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে থাকা বাকিরাও ১ লাখ ১০ হাজার পর্যন্ত টাকায় টিকিট কিনেছেন। তাঁদের সবাইকেই দেশটিতে প্রবেশের নকল অনুমোদনপত্র দিয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে তাঁদের আবুধাবির আবাসিক অনুমতিপত্র ছিল, যা দুবাইয়ে কার্যকর নয়।
প্রতারিত হয়ে ফিরে আসা প্রবাসীরা জানান, ৫৫ জন ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও বাকি ৪৯ জন চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। তারা দুই দিন দুবাই অভিবাসন পুলিশের কারাগারে ছিলেন। সেখানে তাঁদের খাবার দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা। সন্ধ্যায় ঢাকায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে ফ্লাই দুবাইয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রবাসীরা। ৩৯ জন প্রবাসী এতে স্বাক্ষর করেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ‘দীর্ঘদিন কর্মহীন থাকার কারণে কর্মস্থলে ফিরতে অনেকেই ব্যাংক ঋণ, সুদের ওপরে ধার, স্বর্ণের গয়না বিক্রি করে ফ্লাই দুবাইয়ের টিকিট করেছিলাম। কিন্তু তাদের হয়রানির কারণে নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরে এলাম।’ আর্থিক ক্ষতি আদায় করে দিতে অনুরোধ করেন তাঁরা।
এ বিষয়ে রোববার রাত আটটার দিকে ঢাকা বিমানবন্দরের ম্যাজিস্ট্রেট শেখ হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রবাসীরা এখানেই আছেন। সবকিছু যাচাই করে দেখা হচ্ছে। উড়োজাহাজ প্রতিষ্ঠান ফ্লাই দুবাইয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের ডাকা হয়েছে। ফ্লাই দুবাইয়ের দায় পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।