ধর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে উত্তরায় আজও রাস্তায় শিক্ষার্থীরা

উত্তরায় ধর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে এ নিয়ে ষষ্ঠ দিনের মতো রাস্তায় নামলেন শিক্ষার্থীরা
ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর উত্তরায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে ধর্ষণকারীদের বিচার ও সাত দফা দাবিতে আজও রাস্তায় নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা একটা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে উত্তরার বিএনএস সেন্টারের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন তাঁরা।  ধর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে ষষ্ঠ দিনের মতো রাস্তায় নামলেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, দেশে ধর্ষণ রোধে তাঁরা যে সাত দফা দাবি উত্থাপন করেছেন, তার বাস্তবায়ন জরুরি। তাই রাস্তায় নেমেছেন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া একজন লাবিব মুহান্নাদ বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো সারা দেশের মানুষ স্বাগত জানিয়েছে। আমরাও দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

শিক্ষার্থীদের দেওয়া দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও সর্বনিম্ন শাস্তি যাবজ্জীবন নিশ্চিত করা; ধর্ষণের মামলায় লিঙ্গভেদে নারী-পুরুষ কর্মকর্তা নিয়োগ করা; সালিশি পদ্ধতিতে ধর্ষণের বিচারপ্রক্রিয়া বন্ধ করা ও বাদীর নিরাপত্তা-চিকিৎসা নিশ্চিত করা; আগের সব মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা; ইভটিজিং, সাইবার বুলিংসহ সব যৌন নির্যাতন বন্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন শিক্ষা ও আত্মরক্ষামূলক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা; দলীয় বা প্রশাসনের কেউ ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া এবং মিথ্যা মামলার মাধ্যমে নারী, শিশু বা কাউকে হয়রানি করা হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। সর্বোপরি দাবিগুলো নিশ্চিতকরণে সরকারকে লিখিত দিতে হবে এবং এ ব্যাপারে কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একাংশকে রাখতে হবে।

উল্লেখ্য, এরই মধ্যে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের এই খসড়াটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয় বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আগামীকাল এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হবে। অর্থাৎ কাল থেকে এটি আইনে পরিণত হবে।

এর আগে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বেলা ১১টার দিকে বিএনএস সেন্টারের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে তাঁদের আন্দোলন কিছুটা ব্যাহত হয়। পরে বৃষ্টি আর মেঘলা আকাশ উপেক্ষা করেই বেলা একটার দিকে রাস্তায় নামেন তাঁরা।

শিক্ষার্থীদের হাতে থাকা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘ধর্ষণমুক্ত দেশ চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘নারী কোনো পণ্য নয়, নারী কোনো ভোগ্য নয়’ প্রভৃতি। শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, ‘মানুষ তুমি চুপ কেন?’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকের ঠাঁই নাই’ প্রভৃতি।