ধানমন্ডির কেন্দ্রে টিকার দ্বিগুণ মানুষ
সকাল সাতটায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন আর্জিনা বেগম। উত্তর সিটির বাসিন্দা হওয়ায় সকাল ১০টা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে গেলেন। ধানমন্ডি ৮/এ নম্বরে ডিঙি রেস্টুরেন্টের পাশে টিকাকেন্দ্রের ঘটনা এটি। এ কেন্দ্রে হইচইয়ের কারণে দেরিতে টিকা দেওয়া শুরু হয়।
আজ রোববার কেন্দ্রে এসে দেখা যায়, এখানে টিকা কারা পাবেন, কারা পাবেন না, তা নিয়ে নানান দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন মানুষ। কেন্দ্রের টিকার পরিমাণ দিনে ৩৫০ ডোজ। কিন্তু মানুষ দ্বিগুণের বেশি।
এর মধ্যে বৃষ্টি শুরু হলে ভিজেই অনেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। কেন্দ্রের এক স্বেচ্ছাসেবক জানান, গতকালের চেয়ে আজ বেশি মানুষ। যাঁরা আজ পাবেন না, তাঁরা পরদিন আসবেন।
ডিঙিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ের পাশে তাঁবু টাঙিয়ে টিকার বুথ করা হয়েছে।
এ কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রমে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক সহযোগিতা করছে। বাসাবোর বাসিন্দা ফাহমিনা জান্নাত টিকাকেন্দ্রে এসে শোনেন, যাঁরা ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, তাঁরাই এখানে টিকা পাবেন। এ নিয়ে হইচই হয়। প্রায় ৪০ মিনিট পর টিকা দেওয়া শুরু হয়। এ কেন্দ্রে চারটি লাইন করা হয়। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নারী ও পুরুষের দুটি এবং ওয়ার্ডের বাইরের নারী ও পুরুষের দুটি লাইন।
ফাহমিনা ও তাঁর স্বামী সকাল সাতটায় এসে লাইনে দাঁড়ান। তিনি ১০টার পরে টিকা পেলেও তাঁর স্বামী দুপুর ১২টাতেও লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
টিকা নিতে আসা বেশির ভাগ মানুষই জানান, যথেষ্ট তথ্যের ঘাটতির কারণে তাঁরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। কেন্দ্রের সামনে উল্লেখ করা উচিত ছিল কারা এখানে টিকা পাবেন।
টিকাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা জানান, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা নিষেধ। নিবন্ধন করে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের আলাদা একটি বুথে টিকা কার্ডের তথ্য একটি খাতায় নিবন্ধন করা হচ্ছে। আর যাঁরা শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে এসেছেন, তাঁদের আলাদা করে নিবন্ধন করে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এ নিবন্ধন কার্যক্রম করতে গিয়েই একেকজনের জন্য সময় বেশি লাগছে।
কেন্দ্রে বয়স্কদের জন্য আলাদা লাইন নেই। তবে কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা একজন জানান, স্বেচ্ছাসেবকেরা বয়স্কদের দেখলে সামনে নিয়ে আসেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মানাও হচ্ছে না। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২০০ ডোজের বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে লাইনে তখনো দ্বিগুণ মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন।
টিকা নিয়ে একেক সময়ে একেক তথ্যের কারণে কয়েকজন বেশ ক্ষোভ প্রকাশ করলেন। তাঁরা জানান, টিকা নিয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্যই পাওয়া যাচ্ছে না। বলা হচ্ছে, প্রচুর টিকা আছে, কিন্তু নিবন্ধনের ১০ থেকে ১৫ দিন হলেও এসএমএস আসছে না। আবার গণটিকা কোন কেন্দ্রে কারা পাবেন, সে তথ্যও সঠিকভাবে জানা যাচ্ছে না। বয়সের সীমাও কখনো ২৫, কখনো ১৮ বলা হচ্ছে। এই কেন্দ্রে ২৩ বছর বয়সী একজন এসেও টিকা পাওয়ার জন্য কিছুক্ষণ হইচই করেন। ধানমন্ডি ২ নম্বরের ষাটোর্ধ্ব বাসিন্দা আবুল কালাম বেলা ১১টার পরে এসে হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি পরিস্থিতি দেখে লাইনে দাঁড়ানোর সাহস করেননি।