পরিবেশের ক্ষতি করলেও উন্নত দেশ আমাদের কথা শুনবে না : আবুল কালাম আজাদ

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এসডিজি অর্জনে আইনের ভূমিকা এবং পরিবেশগত সুশাসন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা।
ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক সাবেক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, ‘অধিকাংশ উন্নত দেশ উন্নয়ন করে যাবে।

কিন্তু তাদের উন্নয়নের ফলে পরিবেশের ক্ষতির কথা আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো বলতে পারবে না। তারা আমাদের কথা শুনবে না।’

শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এসডিজি অর্জনে আইনের ভূমিকা এবং পরিবেশগত সুশাসন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারের আয়োজন করে পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, পরিবেশ রক্ষায় বিশ্বের ৫৫টি দেশের সদস্যদের নিয়ে একটি পার্লামেন্টারিয়ান ভালনারেবল ফোরাম করা হয়েছে। এটি পরিবেশ রক্ষায় একযোগে কাজ করবে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের কমিশনার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ এনার্জি সোসাইটি অ্যাক্ট (আইন) করেছি। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি প্ল্যাটফর্ম করেছি, যেখানে সব বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা হতে পারে।’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) অর্থ, বাণিজ্য ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক, অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের সেকশন ফর ডিপার্টমেন্ট অব এনভায়রনমেন্ট পাওয়ার দেওয়া হয়েছে। নদী অধিকার আসলে মানুষের অধিকার। পরিবেশের সুরক্ষা সাধারণ মানুষ, অংশীজন ও ব্যবসায়ীদের মধ্যেও রয়েছে।

মোস্তাফিজুর রহমান আশা প্রকাশ করে বলেন, এই সেমিনারের সুপারিশগুলো অত্যন্ত বাস্তবসম্মত। এগুলো সরকারের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে পৌঁছাবে এবং তাঁরা সেগুলো দেশের পরিবেশের স্বার্থে বাস্তবায়ন করবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার। তিনি বলেন, পরিবেশ সুরক্ষা, স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসের অধিকারের প্রচার এবং এসডিজি অর্জনের জন্য পরিবেশগত শাসনকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। পরিবেশগত শাসনের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, এটা কেবল আইনের যথাযথ প্রয়োগই বাড়াবে না বরং টেকসই পরিবেশের প্রচারও সহজতর করবে।

বাংলাদেশ সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক সালিমুল হক বলেন, বাংলাদেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও অ্যাডভোকেসি করে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করতে হবে। আমরা নিজেদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে পারলে বাস্তবায়নকারী সংস্থা এবং কর্মকর্তারাও সঠিক পথে চলতে বাধ্য।

বাপার নির্বাহী সদস্য ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘সরকারের মেকানিজমকে (কৌশল) সামনে রেখে আমাদের চিন্তা-ভাবনা করে চলে না। আমাদের যেতে হবে সকল অংশীজনের কাছে।’

বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, আলোচনা এবং পর্যালোচনা মধ্য দিয়ে যাতে আগামী দিনের পরিবেশের জন্য ধ্বংসাত্মক না হয় সে জন্য টেকসই উন্নয়ন ও অভীষ্ট অর্জন করতে সরকারকে সহযোগিতা করা প্রয়োজন।

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাঈদা নাসরিন, বাপার নির্বাহী সদস্য এমএস সিদ্দিকী, বাপার কোষাধ্যক্ষ মহিদুল হক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, অধ্যাপক কামরুজ্জমান মজুমদার, হুমায়ন কবির সুমন প্রমুখ।