জাতীয় প্রেসক্লাবে শুক্রবার ‘৭১-এর গণহত্যা ও পাকিস্তানের বর্বরতা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’
ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের গল্প। এসব গল্প নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট থেকে নতুন প্রজন্ম যেন সরে না যায় সেই উদ্যোগ নিতে হবে।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
‘৭১–এর গণহত্যা ও পাকিস্তানের বর্বরতা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা আয়োজন করে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’। সভায় বক্তারা একাত্তরের গণহত্যার সঠিক বিচার ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানান।

পাকিস্তান গণপরিষদের অধিবেশনের সব কার্যবিবরণী ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি বাংলাতেও রাখার দাবি উত্থাপনকারী ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নাতনি সাংসদ আরমা দত্ত সভায় বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম যেন একাত্তরের প্রেক্ষাপট ধারণ করে বেড়ে ওঠে সেজন্য আমাদের একাত্তরের গল্প বেশি বেশি জানতে হবে।’

দেশের প্রতিটি ঘরে মুক্তিযুদ্ধের গল্প রয়েছে উল্লেখ করে আরমা দত্ত বলেন, এই গল্পগুলো নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে হবে। বাঙালি জাতি মাথা নোয়াতে জানে না। রক্তের ওপর হাঁটতে জানে। ২৫শে মার্চ কালরাতকে ‘গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করার ব্যবস্থা নিতে হবে।

সভায় বীরপ্রতীক সাজ্জাদ আলী বলেন, ‘কথায় কথায় আমরা পাক আর্মি বলি। পাক মানে পবিত্র। তাদের পাক বলা যাবে না। তারা গণহত্যা চালিয়েছে। তারা পাকিস্তানি আর্মি।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘বিজয় ও স্বাধীনতা দিবস আমাদের গৌরবোজ্জ্বল দিন। একইভাবে আমাদের স্মরণ করা উচিত, ২৫ মার্চ কালরাত্রি জাতীয়ভাবে গণহত্যা দিবস পালন করতে হবে। কারণ, গবেষণা থেকে উঠে এসেছে এটি ছিল একটি পরিকল্পিত গণহত্যা।’

বাংলাদেশের সবদিক থেকে উন্নতি হয়েছে উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে ধারণ করি। পাকিস্তানকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। এর কোনো ছাড় নেই। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছেন। ২ লাখ মা-বোন নির্যাতিত হয়েছেন। এগুলো প্রমাণের অপেক্ষা রাখে না।’

আলোচনা সভায় শহীদ পরিবারের সদস্য নট কিশোর আদিত্য বলেন, ‘বিশেষ দিন ছাড়া দেশের জন্য আত্মত্যাগকারী শহীদদের স্মরণ করা হয় না। আমার বাবার প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু কষ্ট হয়, যখন দেখি রাজাকার-আলবদর মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থাকে। এরা যদি না থাকতো, তাহলে নয় মাস স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করতে হতো না। নয় দিনে স্বাধীনতা পেতাম।’

এ ছাড়া সংগঠনের সদস্য সচিব মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় সভাপতির বক্তব্যে নাট্যকার পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পাকিস্তানি গণহত্যা তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত নয়। ২৫ মার্চের আগেই পরিকল্পনামাফিক তারা দেশের প্রতিটি সেনানিবাসে হত্যার পরিকল্পনা জানিয়ে দিয়েছিল।’