ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় আরেকজনের স্বীকারোক্তি
রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ সরকারি ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় গ্রেপ্তার মিজানুর রহমান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তিনি জবানবন্দি দেন। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (প্রসিকিউশন) রনপ কুমার রায়।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্যরা ৫০ হাজার টাকায় আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর কাছ থেকে ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কিনে নেন। পরে সেই প্রশ্নপত্র কয়েক হাত ঘুরে জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা সোহেলের কাছে কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়। ওই প্রশ্নপত্র বিক্রি করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন সোহেল।
পুলিশ কর্মকর্তা রনপ কুমার রায় জানান, এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মিজানসহ ছয়জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর বাইরে দুজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এর আগে ডিবি পুলিশ জানায়, এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আহছানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ন দেলোয়ার পরীক্ষার আগে প্রেসের কাটিং মাস্টার রবিউলকে প্রশ্নপত্র বের করার অনুরোধ করেন। পরে তিনি ল্যাব সহকারী পারভেজ মিয়ার হাতে প্রশ্নপত্র তুলে দেন। ওই সময় তাঁর সঙ্গে আহছানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনিশিয়ান মোক্তারুজ্জামানও ছিলেন। তিনিও এখন গ্রেপ্তার আছেন। প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেলোয়ার ও রবিউল ৪৪ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। চক্রের সদস্যরা এর আগেও চারবার ব্যাংকে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন।
গত ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীন পাঁচটি সরকারি ব্যাংকের ১ হাজার ৫১১টি অফিসার ক্যাশ পদের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে এক ঘণ্টার পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর একাধিক প্রার্থী অভিযোগ করেন, পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১০০টি প্রশ্নের প্রিন্ট করা উত্তরপত্র ফেসবুকে পাওয়া গেছে। ওই পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্বে ছিল আহছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর পরীক্ষাটি বাতিল করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার সিলেকশন কমিটি।