মিয়ানমারের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে ১০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু: ইউনিসেফ

কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরগুলোতে বসবাসকারী ১০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু নিজ দেশ বা মিয়ানমারের পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে শিক্ষা গ্রহণের জন্য তালিকাভুক্ত হতে চলছে। রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যে এ উদ্যোগকে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলছে ইউনিসেফ। আজ রোববার ইউনিসেফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়, প্রথম ১০ হাজার শিশুর তালিকাভুক্ত হওয়ার এই মাইলফলক এ মাসেই অর্জিত হবে।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের মধ্যে শিক্ষার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ইউনিসেফ ও উন্নয়ন অংশীদাররা সেই চাহিদার প্রতি সাড়া দিতে শরণার্থীশিবিরে কাজ করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের আশ্রয়শিবিরগুলোতে প্রায় চার লাখ স্কুল-বয়সী রোহিঙ্গা শিশু রয়েছে। এদের মধ্যে তিন লাখ শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষা গ্রহণ করছে। ইউনিসেফ এবং অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদার বিশ্বের বৃহত্তম এই শরণার্থীশিবিরে সুবিশাল এই শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিভিন্ন শিবিরে ৩ হাজার ৪০০টি শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৮০০টিই ইউনিসেফের সহায়তায় পরিচালিত হয়।

মিয়ানমারেরর পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে পরিচালিত এই শিক্ষাক্রমটি প্রাথমিকভাবে ষষ্ঠ থেকে নবম গ্রেডের ১০ হাজার শিশুকে প্রাধান্য দিয়ে চালু করা হচ্ছে। সাধারণত ১১ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুরা ষষ্ঠ থেকে নবম গ্রেডের আওতায় পড়ে। তবে বাস্তবে অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুই শিক্ষায় পিছিয়ে পড়েছে। এ কারণে ষষ্ঠ থেকে নবম গ্রেডে ভর্তি হওয়া বেশির ভাগ শিশুর বয়স ১৪ থেকে ১৬ বছর। এদের মধ্যে বয়সের দিক থেকে কেউ কিছুটা ছোট আবার কেউ কিছুটা বড়। ইউনিসেফের উদ্দেশ্য, পর্যায়ক্রমে এই পাঠ্যক্রমের বিস্তার ঘটানো। যাতে ২০২৩ সালের মধ্যে সব স্কুল-বয়সী শিশু মিয়ানমারের পাঠ্যক্রমের মাধ্যমেই শিক্ষা লাভ করতে পারে।

ইউনিসেফের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনেক অগ্রগতি সত্ত্বেও প্রায় এক লাখ স্কুল-বয়সী রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশু স্কুলে যাচ্ছে না। ইউনিসেফ ও উন্নয়ন অংশীদাররা এই শিশুদের কাছে পৌঁছাতে এবং তাদের স্কুলে যাওয়ার পথে যেসব প্রতিবন্ধকতা কাজ করে, সেগুলো দূর করতে চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘এই শিশুদের আশা দেওয়ার জন্য, তাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য, তাদেরকে অনাগত ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করার জন্য আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে। প্রতিটি রোহিঙ্গা শিশুর মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে ইউনিসেফ রোহিঙ্গা সম্প্রদায়, বাংলাদেশ সরকার এবং অংশীদারদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে।’