মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের তালিকা চান বুদ্ধিজীবীদের সন্তানেরা

রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা। ঢাকা, ১৪ ডিসেম্বর
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে আবারও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রকাশের দাবি জানালেন তাঁদের সন্তানেরা। তাঁরা বলছেন, অনেক আগেই বুদ্ধিজীবী ও শহীদদের তালিকা তৈরি করা উচিত ছিল, কিন্তু সেটি হয়নি।

আজ মঙ্গলবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে রাজধানীর রায়েরবাজার বধ্যভূমির স্মৃতিসৌধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে এসব দাবি করেছেন শহীদ পরিবারের কয়েকজন সন্তান। বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে জড়িত পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করতে আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে, ক্ষোভের সঙ্গে সে প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা।

এ সময় শহীদ বুদ্ধিজীবী মকসুদ আলীর মেয়ে তহমিনা খানম বলেন, ‘শহীদদের তালিকা আমাদের সবচেয়ে আগে প্রয়োজন। আমরা (সন্তানেরা) এটা দেখে যেতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নিখোঁজ ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সন্তানদের মানুষ করতে লড়াই করেছেন তাঁদের স্ত্রীরা। এ জন্য সরকারিভাবে শহীদজায়াদের সম্মানিত করার ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তহমিনা খানম।

শহীদ বুদ্ধিজীবী কাজী শামসুল হকের ছেলে কাজী সাইফুদ্দিন আব্বাস বলেন, ‘একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দেশকে মেধাশূন্য করার যে চিন্তা করেছিল, সেটি হয়তো সম্ভব হবে না। আমাদের আগামী প্রজন্ম আরও মেধাবী হবে, সে রকমই দেখছি।

অনেক আগে থেকেই আমাদের উচিত ছিল, বুদ্ধিজীবীদের ও শহীদদের তালিকা তৈরি করা। মুক্তিযুদ্ধে আমরা ৩০ লাখ শহীদ বলছি, কিন্তু তাঁদের তালিকা তৈরি হয়নি। তালিকা তৈরির জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমরা লড়াই করছি, এখনো এ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।’

শ্রদ্ধা জানাতে আসেন শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে আসিফ মুনীর। তিনি বলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর আমাদের জন্য কিছুটা শোকের আবার কিছুটা আনন্দেরও। কারণ, শেষ পর্যন্ত ৩০ লাখ শহীদ ও বুদ্ধিজীবীর আত্মত্যাগে আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম।

তবে যে উদ্দেশ্যে এ হত্যাকাণ্ড করা হয়েছিল, তা যেন চরিতার্থ না হয়।’ এ সময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী হত্যার রায় হয়েছে কিন্তু পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। কিন্তু শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে একটা প্রশ্ন করছি, আর কত দিন লাগবে এ রায় কার্যকর করতে?’

এর আগে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম একাত্তরের পক্ষে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদবেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।