রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারের নকশা জালিয়াতির মামলায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ূন খাদেমসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আগামী ১৫ নভেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ সৈয়দ কামাল হোসেন এই আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল।
মামলার অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন এফ আর টাওয়ারের জমির মালিক এস এম এইচ আই ফারুক, রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল ও রাজউকের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান। এ ছাড়া অভিযোগপত্রে থাকা আরেক আসামি রাজউকের সাবেক অথরাইজড অফিসার সৈয়দ মকবুল আহমেদ মারা গেছেন।
পিপি মোশাররফ হোসেন জানান, বনানীর এফ আর টাওয়ার নির্মাণে ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন এবং নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ১৮ তলা পর্যন্ত বাড়ানোর অভিযোগে করা মামলায় রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। তাঁরা জামিনে আছেন।
২০১৯ সালের ২৮ মার্চ বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, অভিযোগ গঠনের শুনানির সময় চারজন আদালতে হাজির ছিলেন। এ সময় তাঁরা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন এবং নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ১৮ তলাবিশিষ্ট এফ আর টাওয়ার নির্মাণ করেন। ১৯৯০ সালে ১৫ তলা ভবন নির্মাণের জন্য রাজউকের অনুমোদন পান এস এম এইচ আই ফারুক। পরে ১৯৯৬ সালে ১৮ তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন চেয়ে সংশোধিত নকশা অনুমোদনের জন্য আবেদন করেন তিনি। সংশোধিত নকশা ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী না হওয়া এবং প্রস্তাবিত ভবনের উচ্চতা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিধিনিষেধ অনুযায়ী অনুমোদনযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এর এক মাসের মধ্যেই সংশোধিত ও নকশা অনুমোদন করা হয়। এ কাজে অবৈধ লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে।
পরে ১৮ তলা ভবন নির্মাণের জন্য জমির মালিক চুক্তিবদ্ধ হন আবাসন প্রতিষ্ঠান রূপায়ন গ্রুপের সঙ্গে। রূপায়ন ওই জায়গায় অবৈধ নকশার ভিত্তিতেই ১৮ তলা ভবন নির্মাণ করে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুসারে ভবনের দুই পাশে যে পরিমাণ জায়গা রাখার কথা তা–ও রাখা হয়নি। পার্কিংয়ের জায়গার ক্ষেত্রেও রাখা হয়েছে প্রায় নির্দিষ্ট পরিমাণের এক–তৃতীয়াংশ জায়গা। আবাসিক ভবন হিসেবে অনুমোদন নেওয়া হলেও পুরো ভবনটি ব্যবহার হয়েছে বাণিজ্যিক হিসেবে।
এজাহারে আরও বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা অবৈধভাবে ভবন নির্মাণ করায় অগ্নিকাণ্ডে জনসাধারণের জানমালের ক্ষতি হয়েছে।
২০১৯ সালের ২৫ জুন দুদকের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে মামলাটি করেন।