রাজধানীর রূপনগর থানার বেড়িবাঁধ এলাকায় ২০ ফেব্রুয়ারি শাক তুলতে গিয়ে এক ব্যক্তির লাশের সন্ধান পান এক নারী। পুলিশ এসে সে লাশ উদ্ধার করে। পরে জানা যায় প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে নিখোঁজ হওয়া নুরুল ইসলামের লাশ এটি। নুরুল ইসলামের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর স্ত্রী রহিমা বেগম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্ত্রী আর তিন সন্তানকে নিয়ে রাজধানীর রূপনগর এলাকায় থাকতেন নুরুল ইসলাম। রূপনগর এলাকায় তাঁর হার্ডওয়্যারের দোকান ছিল। প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে নিখোঁজ হন নুরুল ইসলাম। গত বছরের ৪ নভেম্বর নুরুলের স্ত্রী রহিমা বেগম রূপনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তবে নুরুলের সন্ধান না পাওয়ায় রহিমা বেগম ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে চারজনকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা করেন। আদালত মামলাটিকে এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ দেন। মামলার পর রূপনগর থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, নুরুল ইসলাম নিখোঁজ হওয়ার পর সাড়ে তিন মাস পর তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার তিন আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার তিন আসামি হলেন সোহেল মিয়া, কালু মজুমদার ও কাজী তরিকুল ইসলাম ওরফে রয়েল।
নুরুল ইসলামের স্ত্রী রহিমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্বামী নিখোঁজ হওয়ার পর তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। কিন্তু পুলিশ তাঁর স্বামীকে উদ্ধার করতে পারেননি। পরে তিনি আদালতে গিয়ে চারজনের নামে অপহরণ মামলা করেন। এরপর পুলিশ তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ তাঁর স্বামীর লাশও উদ্ধার করেছে।
তদন্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নুরুল ইসলাম কেন খুন হন, সেই বিষয়টি তদন্ত চলছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্বশত্রুতার জের ধরে নুরুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে।
নুরুল ইসলামের স্ত্রী রহিমা বেগম জানান, স্বামী নিখোঁজ হওয়ার কয়েক দিন পর আসামি সোহেল মিয়া ও কালু মজুমদার তাঁকে ফোন দিয়ে বলেন, নুরুল ইসলাম তাঁদের হেফাজতে আছেন। ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিলে তাঁর স্বামীকে মুক্তি দেওয়া হবে। এরপর তিনি ৪০ হাজার টাকা দেন। টাকা দেওয়ার পর থেকে সোহেল ও কালুর মুঠোফোন বন্ধ ছিল। পরে তিনি আদালতে গিয়ে মামলা করেন।