হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তিনজন গ্রেপ্তার

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ছবি: সংগৃহীত

হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সুপারশপ স্বপ্নের ১৮ লাখ টাকা মূল্যের ডিজিটাল ভাউচার তৈরি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটির (সিটিটিসি) সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ এ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার তিন আসামি হলেন নাসিমুল ইসলাম (২৩), রেহানুর হাসান রাশেদ (২২) ও রাইসুল ইসলাম (২৫)।  

গ্রেপ্তার তিন আসামিকে রোববার বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। আদালতে আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।    

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রোববার এসব তথ্য জানান সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান। তিনি জানান, নওগাঁ, গাইবান্ধা ও রাজধানীর মিরপুর এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে পুলিশ।

আসামিদের কাছ থেকে হ্যাকিংয়ের কাজে ব্যবহৃত ছয়টি মোবাইল, দুটি ল্যাপটপ ও একটি সিপিইউ, ক্রিপ্টোকারেন্সি, টাকা, ইলেকট্রনিক কার্ড ও স্বপ্নের ই-ভাউচারের মাধ্যমে কেনা বিপুল পরিমাণ পণ্যসামগ্রী জব্দ করা হয়েছে বলে জানান আসাদুজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সুপারশপ স্বপ্ন তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেশের ১৮৬টি আউটলেটের সেলস মনিটরিং, ইনভেনটরি ম্যানেজমেন্ট, কর্মী ব্যবস্থাপনা, আর্থিক লেনদেনের হিসাব, ডিজিটাল ভাউচার ব্যবস্থাপনাসহ সবধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। স্বপ্নের ডিজিটাল সিস্টেমটি তাই অ্যাডভান্স সাইবার সিকিউরিটি প্রটোকল অনুযায়ী অত্যন্ত সুরক্ষিত করে তৈরি করা হয়েছিল। সুপারশপ স্বপ্নের শক্তিশালী সাইবার নিরাপত্তাব্যবস্থাকে ভেঙে বিপুল অঙ্কের অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক ডিজিটাল ভাউচার জেনারেট করে বিক্রি করা হয়। বিষয়টি গত মাসের মাঝামাঝি স্বপ্ন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। পরে তারা বিষয়টি সিটি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের কাছে লিখিতভাবে জানায়। এ বিষয়ে ছায়াতদন্ত করে সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।

পুলিশ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, সুপারশপ স্বপ্নের ডিজিটাল সিস্টেমের ফরেনসিক বিশ্লেষণ ও রিভার্স অ্যানালাইসিস উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে হ্যাকার চক্রটির ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট শনাক্ত করা হয়। হ্যাকার চক্রের সদস্য নাসিমুল, রাশেদ ও রাইসুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

স্বপ্নের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, একটি অপরাধীচক্র স্বপ্নের সুনাম নষ্ট করতে এই কাজ করছে। ডিজিটাল ভাউচার জালিয়াতি করে বিক্রি করাসহ গত মাসে স্বপ্নে নাম করে ভুয়া অফার দিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। স্বপ্ন এসব বিষয় নিয়ে থানায় অভিযোগ ও মামলা করে। স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ সাইবার ক্রাইম টিমের সহযোগিতা চাইলে সাইবার ক্রাইম ইউনিট সেটা আমলে নিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করে।